1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

১৪ দলের শরিকদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ, সান্ত¡না জোটনেত্রীর

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের তৎপরতা তলানিতে এসে ঠেকেছে। কালেভদ্রে বৈঠকে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ক্ষমতাসীন জোটে। এর মধ্যেই সরকারি দলের সভাপতি ও জোটনেত্রীর কাছে অবমূল্যায়নের অভিযোগ করেছেন জোটের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। এমন প্রেক্ষাপটে জোটের প্রয়োজন বা এখনও প্রাসঙ্গিকতা আছে কিনা, সেই প্রশ্নও রেখেছেন তারা। তবে শরিকদের সান্ত¡না দিয়ে তাদের নেত্রী বলেছেন, জোট আছে, জোট থাকবে। শরিক দলগুলোকে দলীয় তৎপরতা বাড়িয়ে নিজেদের জনপ্রিয় ও সংগঠিত হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বৃহ¯পতিবার (২৩ মে) রাতে গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে এসব আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে ১৪ দলের জোটগত তৎপরতা তলানিতে ঠেকা, শরিকদের অবমূল্যান করা, জোট নেতাদের নিয়মিত বৈঠক না হওয়া এবং শরিক দলগুলোর সাংগঠনিক শক্তি ও ভোট ব্যাংক ছোট করে দেখাসহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ স¤পাদক দিলীপ বড়–য়া, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারিসহ শীর্ষ নেতারা। সেই সঙ্গে এমন পরিস্থিতিতে ১৪ দলীয় জোটের প্রয়োজন বা প্রাসঙ্গিকতা এখনও আছে কিনা, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে জোটনেত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানতে চেয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি গণমাধ্যমকে বলেন, বৈঠকে আমাদের কথা জানতে চেয়েছেন জোটনেত্রী। আমরা আমাদের কথা বলেছি। আলোচনায় জোটের প্রয়োজনীয়তা বা প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে যেমন কথা উঠেছে, তেমনই জোটের থাকা নিশ্চিত করেছেন নেত্রী। আমাদের আরও শক্তিশালী হতে বলেছেন। আমরাও জোটকে আরও শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়েছি।
জানা গেছে, বৈঠকের শুরুতে রাশেদ খান মেনন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়েছিল, সেটি এখন ¤্রয়িমাণ। কীভাবে এই জোট আগামীতে কার্যকর করা হবে এবং দেশে বেড়ে চলা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মোকাবিলা করা হবে, নতুন করে তা ঠিক করতে হবে।
বৈঠকে জোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শরিকদের অবজ্ঞা ও অবমূল্যায়নের অভিযোগ করেন হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, এক/এগারোর সময় আওয়ামী লীগের অনেকে শেখ হাসিনার পাশে না থাকলেও ১৪ দলের শরিকেরা ছিল। তাদের এখন আগের মতো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। জোটের প্রাসঙ্গিকতা আছে কিনা, থাকলে জোটকে আরও সক্রিয় করতে হবে।
গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ স¤পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ১৪ দলের ভেতরে থাকা মান-অভিমানসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। জোটের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জোটনেত্রী জোট থাকবে এবং আগামীতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন।
সূত্রমতে, বৈঠকে জামায়াতে ইসলামিকে চাপে রাখতে মামলা করাসহ নিজ দলের অবদান তুলে ধরে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ এখন তার সেই অবদান ভুলে গেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত দলগুলোকে সামনে নিয়ে আসা এবং দুর্দিনে সঙ্গী হওয়া ১৪ দলের শরিক দলকে অবমূল্যায়ন করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বৈঠকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমকে আসন ছাড় দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দিলীপ বড়–য়া। জোটনেত্রীকে তিনি বলেন, আপনি আমাদের ভোট ব্যাংকের কথা বলছেন, জেনারেল ইব্রাহিমের কী ভোট আছে? তার ভোট হাটহাজারিতে থাকলেও চকরিয়ার (কক্সবাজার-১) এমপি হলো কীভাবে?
সূত্রমতে, ১৪ দলের শরিকদের ভোট ব্যাংক কেমন আছে, তা দেখেই জোট করা হয়েছিল। তখন এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা না হলেও এখন কেন তা নিয়ে কথা বলা হচ্ছে? রাজনৈতিক ঐক্যমতে আগে গুরুত্ব দেওয়া হলেও এখন শরিকদের সাংগঠনিক শক্তি তুলনা করা হচ্ছে। আদর্শের ভিত্তিতে করা জোটে ভোট এবং শক্তির বিষয়টি সামনে আসবে কেন? এছাড়া ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুকে জোটের ব্যাপারে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার কথাও বলেন তারা।
বৈঠকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপসহ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকি মোকাবিলায় ১৪ দলকে আরও সক্রিয় করার দাবি জানান নেতারা। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতি ক্ষুব্ধ বা কাউকে দোষারোপ না করে নিজ নিজ দলের শক্তি বাড়ালে জোটের শক্তিও বাড়বে। আর যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে তাদের সঙ্গে কোনও ধরনের ব্যবসা করবে না বলেও জানান তিনি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জোটের স্ব স্ব দলকে আরও সংগঠিত এবং জনগণের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে ১৪ দলের নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ বৈঠকের পর ১৪ দলের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে সেটা থাকবে না বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
বৈঠক শেষে রাশেদ খান মেনন সাংবাদিকদের বলেন, হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন করে তাকে হারানোর ব্যবস্থা করেছে, মাইজভান্ডারির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। এসব ক্ষেত্রে ১৪ দলের নেতাদের যদি পাশে না নেন তাহলে আমাদের ঐক্যবদ্ধতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম এবং ঐক্যবদ্ধ থেকেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।
গণভবনে বৈঠকের আগে অনানুষ্ঠানিকভাবে জোটের শরিক দলের কয়েকজন নেতা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন বলেও জানা গেছে। তারা জোটের প্রাসঙ্গিকতা স¤পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া এবং ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন। তারা সিদ্ধান্ত নেন আগামীতে আওয়ামী লীগ না থাকলেও তারা জোটের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি পালন করবেন।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com