1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪, ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

শিশুর স্বপ্নবাজ হয়ে উঠার প্রত্যাশা প্রসঙ্গে

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪

পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবাদপ্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘শিশুদেরকে স্বপ্ন দেখাবেন নবনিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা’। বিবরণে বলা হয়েছে, ‘সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় নবনিয়োগপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২জন শিক্ষককে বরণ করেছে উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি। বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরিতে এ উপলক্ষে বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।’
অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘অতিথিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে নতুন শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সবার আগে শিক্ষকদের ডিসিপ্লিন হতে হবে। হতে হবে রেসপন্সেবল। শিক্ষকরা সঠিকভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করলে সমাজ সুন্দরভাবে শিক্ষকদের গ্রহণ করে। তাই কর্ম ও দক্ষতা দিয়েই সবার মন জয় করতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, আপনারা শিশুদের কাছে স্বপ্নবাজ হবেন। তাদেরকে স্বপ্ন দেখাবেন। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’ নবনিযুক্ত শিক্ষকরা কী করতে পারবেন সেটা পরে ভেবে দেখা যাবে। তার আগে নিযুক্ত ও কর্মরতরা কী করেছেন একটু ভেবে দেখা যাক।
শিরোনামটি পাঠ করার পর যে-কারও মন খুশিতে ভরে উঠার কথা। অথচ অভিজ্ঞমহলের ধারণা, আমাদের শিক্ষক সমাজ নিজেই স্বপ্ন দেখা ভুলে গেছেন। তাই প্রশ্ন থেকেই যায়, স্বপ্নহীন শিক্ষক কী করে শিশুদেরকে স্বপ্ন দেখাবেন? ‘শিক্ষা জাতির মেরুদ-’ এই চিরন্তন সত্যের পাশে মেরুদ-হীনÑ বলা ভালোÑভেঙ্গে দেওয়া মেরুদ-ওয়ালা শিক্ষক বোধ করি কেবল এক একজন মিথ্যেবাদী, প্রতারক, লোভী, আত্মস্বার্থপর, পরশ্রীকাতর ও অর্থলোলুপ, ক্ষমতালোভী অসংস্কৃত খুনিকে তৈরি করতে পারবেন। এটাই তাদের শিক্ষাদান কর্মকা-ের একমাত্র ভবিতব্য, এর কোনও অন্যথা নেই। এমনটাই তো হয়ে আসছে। সমাজকে বদলে দিতে পারে, প্রগতির পথে এগিয়ে নিতে পারে তেমন কোনও স্বপ্নবাজ তো তৈরি হয় নি। হয় নি যে তার প্রমাণ তো হাতের কাছেই। যেমন তিন তিনবারের সংসদ সদস্য কলকাতায় গিয়ে খুন হলেন এবং তাঁর বাল্যবন্ধু খুনি আমেরিকায় পালিয়ে গেলেন। অথচ তাঁদের কারওই অর্থসম্পদের কোনও অভাব ছিল না। তাঁরা দুজনেই তো শিক্ষকের কাছেই শিক্ষা নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিরাও উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। এখন যাঁরা প্রশাসনের অভ্যন্তরে বসে প্রশাসনকে ঘুষ-দুর্নীতির আখড়া করে তোলে সম্পদের পাহাড় গড়ার সাধনায় নিরত আছেন, তাঁরাও শিক্ষকের কাছে পড়েই শিক্ষিত হয়ে চাকরি পেয়েছেন। এই তো উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে যাঁরা অনাকাক্সিক্ষত বিরোধে জড়িয়ে নানবিধ অনিয়ম ও আইনবিরোধী কর্মকা-, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে খুনোখুনি পর্যন্ত করতে কসুর করছেন না তাঁরাও তো কোনও না কোন শিক্ষকের কাছে শিক্ষা নিয়েছেন। তো এই পরিস্থিতিতে কী ভাবা যায়? শিক্ষক কি এই সব অপকর্মকে অভীষ্ট করে শিশুকে স্বপ্নবাজ করে তোলবেন? যে-কেউ বলবেন, তা অবশ্যই না এবং আমরা বলবো, শিক্ষরাও অবশ্যই তেমনটা চান না বা করছেন না। তবু তা হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কেন?
অভিজ্ঞমহলের ধারণা, দেশের পুরো সমাজকাঠামোটাইকেই সকল প্রকার অঘটন ঘটার ভিত্তিভূমি করে গড়ে তোলা হয়েছে, এক কথায় সামাজিক সম্পদ কুক্ষিগতকরণের একটি ব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে। অর্থাৎ ব্যক্তিগত মালিকানা বেশি বেশি পরিমাণে শ্রমিক ও অন্যান্যদের উপর খোলাখোলি পুঁজিবাদী শোষণের রূপ নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে, যাকে বলা যায় আত্মসাৎ প্রবণ আর্থসামাজিক ব্যবস্থার কাঠামোগত বিন্যাস। এই বিমানবিক বিন্যাসটাকে বদলে দিতে না পারলে শিক্ষক যতই স্বপ্নবান হোন না কেন, তাঁর কাছে শিক্ষা পেয়ে কোনও শিশু প্রত্যাশিত মানবিক স্বপ্নবাজ হয়ে উঠবে না। শিক্ষক যতই ছাত্রকে ‘সদা সত্য কথা বলিবে’ কিংবা ‘সততাই উৎকৃষ্ট পন্থা’ বলে শিক্ষিত করে তোলেন না কেন, ব্যক্তিগত মালিকানা ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা ছাত্রকে ঠিকই তার নিজস্ব আদলে গড়েপিঠে নিয়ে শোষক অর্থাৎ আত্মসাৎপ্রবণ করে তোলবে এবং প্রকারান্তরে ছাত্রটি অর্থসম্পদ লোভী একটি দানবে পর্যবসিত হয়ে শেষ পর্যন্ত একটি খুনি হয়ে উঠতে কোনও কসুর করবে না, সে বিমানবিক স্বপ্নবাজ হয়ে সকল অকাজের কাজী হয়ে উঠবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com