জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সুনামগঞ্জ সাহিত্য সংসদের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে শহরের মল্লিকপুরস্থ সুনামগঞ্জ সাহিত্য সংসদের গণপাঠাগারের নিজস্ব হল রুমে এই অনুষ্ঠানের আয়েঅজন করা হয়।
সুনামগঞ্জ সাহিত্য সংসদ ও গণপাঠাগারের সাধারণ স¤পাদক রাহমান তৈয়ব এবং সাংগঠনিক স¤পাদক ছালিক সুমনের যৌথ সঞ্চালনায় এবং সুনামগঞ্জ সাহিত্য সংসদ ও গণপাঠাগারের সভাপতি কবি ও গবেষক শেখ একেএম জাকারিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত কবি ও গীতিকার আলহাজ্ব শেখ এম এ ওয়ারিশ। প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট ছড়াকার ইয়াকুব বখত বাহলুল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কবি ও সংগঠক নুরুল হক, কবি সাজাউর রহমান, কবি সৈয়দ আহমদ আশেকী, কবি নজরুল ইসলাম, কবি মোছায়েল আহমেদ প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম খুব কাছ থেকে জীবনকে উপভোগ করেছেন। জীবনে অর্জিত তিক্ত অভিজ্ঞতাই তাকে বিংশ শতাব্দীর সেরা লেখক হিসেবে গড়ে তুলেছিল। বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত পদ চারণা বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বমঞ্চে গৌরবান্বিত করেছে। তাঁর সৃজনশীল সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তিনি মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও সাম্যের কথা বলে গেছেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর কবিতা ও গান অত্যাচারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাবন্দি থাকাকালীন কবি নজরুলের কবিতা ‘বিদ্রোহী’, ও গান ‘কারার ঐ লোহ কপাট’সহ নানা সৃষ্টিকর্ম তাঁকে জন মহলে নন্দিত কবি হিসেবে অন্যরকম পরিচয় দিয়েছে।
উল্লেখ্য, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম অবিভক্ত বাংলার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ সালের ২৫ মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাংলা কবিতার একমাত্র বিদ্রোহী ও গানের বুলবুল। তাঁকে সাম্যের, প্রেমের, যৌবনের, মানবতা ও দ্রোহের কবিও বলা হয়।
তাঁর বাবা কাজী ফকির আহমেদ ও মায়ের নাম জাহেদা খাতুন। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালের ২৪ মে তাঁকে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে এনে জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। তিনি ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট দুরারোগ্যে রোগে মারা যান। কবির শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
আলোচনা সভা শেষে কবির জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয় এবং সুনামগঞ্জ সাহিত্য সংসদের তালিকাভুক্ত লেখকরা জাতীয় কবিকে নিবেদন করে তাদের স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।