শহীদনূর আহমেদ ::
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সুনামগঞ্জের ৪ উপজেলায় নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বৈধ কাস্টিং ভোটের উল্লেখযোগ্য ভোট না পাওয়ায় জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে ১৯ প্রার্থীর। জামানত বাজেয়াপ্তদের মধ্যে রয়েছেন ৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৭ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং ৫ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। বিধি অনুযায়ী, জামানত রক্ষায় একজন প্রার্থীকে নির্বাচনী এলাকার মোট বৈধ কাস্টিং ভোটের আট ভাগের এক ভাগ পাওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। উল্লেখিত ভোট না পাওয়ায় জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে এই প্রার্থীদের।
নির্বাচন কমিশনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে জানাযায়, চার উপজেলার মধ্যে ধর্মপাশা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে। এই উপজেলায় ৩ জন চেয়ারম্যান, ২ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং ২ জন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে।
চেয়ারম্যান পদে জামানত রক্ষায় ৪৮ হাজার ৯৬১ বৈধ কাস্টিং ভোটের মধ্যে ৬১২০ ভোট পাওয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান পদে মো. বাশার তালুকদার মোটরসাইকেল প্রতীকে ৫৫৯৫ ভোট, মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী দোয়াত-কলম প্রতীকে ২৬৬২ ভোট এবং হায়দার চৌধুরী লিটন কৈ মাছ প্রতীকে ৪৩৫৪ ভোট পাওয়ায় তজামানত হারাতে যাচ্ছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত রক্ষায় বৈধ কাস্টিং ৪৭ হাজার ৬৮৭ ভোটের মধ্যে ৫৯৬০ ভোট পাওয়ার কথা থাকলেও বিজয় হোসেন বই প্রতীকে ৩৭২০ ভোট এবং সাদ্দাম হোসেন মাইক প্রতীকে ২৩৪৫ ভোট পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে। এছাড়াও এই উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মর্জিনা আক্তার ফুটবল প্রতীকে ৫৫৩৯ ভোট এবং রেশমা আক্তার পদ্মফুল প্রতীকে ৯৬৪ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন। জামানত রক্ষায় বৈধ কাস্টিং ৪৭১৫১ ভোটের মধ্যে ৫৪৯৩ ভোট পাওয়ার কথা তাদের।
জামালগঞ্জ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে মকবুল হোসেনের। তিনি বৈধ কাস্টিং ভোটের ৫৫৩৫২ ভোটের মধ্যে ৬৯১৯ ভোট পাওয়ার কথা থাকলেও তিনি চশমা প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৩৬৪৫ ভোট।
তাহিরপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে মিঠু রঞ্জন পাল, আবুল কাশেম ও আলী মর্তুজার। বৈধ কাস্টিং ৭৮ হাজার ৯৬০ ভোটের মধ্যে জামানত রক্ষায় ৯৮৭০ ভোট পাওয়ার কথা থাকলেও হেলিকপ্টার প্রতীকে মিঠু রঞ্জন পাল ৭৬১ ভোট, মোটরসাইকেল প্রতীকে আবুল কাশেম ৪৪৬০ ভোট এবং আলী মর্তুজা ঘোড়া প্রতীকে মাত্র ৬২ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী রনজিত চৌধুরী রাজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে। জামানত রক্ষায় কাস্টিং ৫৯২৪৯ ভোটের মধ্যে ৭৪০৬ ভোট পাওয়ার কথা থাকলেও তিনি দোয়াত-কলম প্রতীকে ৩৭৪৯ ভোট পেয়েছেন।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো. জুলহাস, মো. নুরুল ইসলাম এবং সেলিম আহমদ, তাজ্জত আলী খানের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে। কাস্টিং ৫৮৫৮১ ভোটের মধ্যে ৭৩২২ ভোট পাওয়ার কথা থাকলেও চশমা প্রতীকে মো. জুলহাস ২০৩০ ভোট, উড়োজাহাজ প্রতীকে মো. নুরুল ইসলাম ২৮৬৬ ভোট, সেলিম আহমদ টিয়াপাখি প্রতীকে ৪৫২৩ ভোট এবং মাইক প্রতীকে তাজ্জদ আলী ১৬০৯ ভোট পেয়েছেন।
এছাড়াও এই উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাহফুজা আক্তার, পেয়ারা বেগম এবং মদিনা আক্তারের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে। জামানত রক্ষায় কাস্টিং ৫৮৬৪৩ ভোটের মধ্যে ১০৭০৫ ভোট পাওয়ার কথা থাকলেও পেয়ারা বেগম হাঁস প্রতীকে ৬৭৩৯ ভোট, মাহফুজা আক্তার কলস প্রতীকে ৭৬৫৬ ভোট এবং পদ্মফুল প্রতীকে মদিনা আক্তার ৫৫৩২ ভোট পাওয়ায় তাদের জামানত হারাতে হচ্ছে।
তবে আনুষ্ঠানিকভাবে জামানত বাজেয়াপ্ত বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়। নির্দিষ্ট ভোট না পেলে প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রেজাউল করিম।