1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

একজন শিক্ষক দিয়ে চলা ৩ বিদ্যালয় পেল না শিক্ষক

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪

ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের পাথারিয়াকান্দা এবং মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের দরাপপুর ও দক্ষিণ আমজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় এই তিনটি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে একজন করে শিক্ষক দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলে আসছে। এতে করে এসব বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই দুটি উপজেলার ২১টি বিদ্যালয়ে সম্প্রতি ২২জন সহকারী শিক্ষককে পদায়ন করা হলেও এই তিনটি বিদ্যালয়ের শূন্য পদে কেনো সহকারী শিক্ষককে পদায়ন করা হয়নি। এ নিয়ে বিদ্যালয় তিনটির শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
ধর্মপাশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় ১৯৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১২৫জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য ছিল। এই দুটি উপজেলায় নিয়োগ পাওয়া ২২জন সহকারী শিক্ষক গত ২ মে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগদান করেন। পরে ৫ মে এসব শিক্ষকদেরকে ২১টি বিদ্যালয়ে পদায়ন করা হয়। গত ৬ মে ২২জন সহকারী শিক্ষক ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যে সব বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষক দেওয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর, দাতিয়াপাড়া, জয়পুর, দুলাশিয়া, খালিশাকান্দা, বলরামপুর, দুগনই, দাতিয়াপাড়া লায়েছ ভূঁইয়া, জলুষা শাহাপুর ও মাটিয়ানবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ে একজন করে সহকারী শিক্ষককে পদায়ন করা হয়েছে। অপরদিকে ধর্মপাশা উপজেলার সরস্বতীপুর, সুনই কান্দারবাড়ী, শেখেরগাঁও, লক্ষণখলা, হরিপুর, নয়াবন্দ, কাজীরগাঁও, বাবুপুর, সুখাইড়, বরই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন করে সহকারী শিক্ষক ও একই উপজেলার মহেষপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুজন সহকারী শিক্ষককে পদায়ন করা হয়েছে।
ধর্মপাশা উপজেলার পাথারিয়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক লিটন চন্দ্র বর্মণ বলেন, এই বিদ্যালয়টিতে তিনজন শিক্ষকের পদ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের পদটি পাঁচ বছর ধরে শূন্য। আমি গত বছরের ২৮মে থেকে এই বিদ্যালয়টিতে কর্মরত আছি। এখানে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ৬৪জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এই বিদ্যালয়টিতে আমাকে একাই পাঠদান করাতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সুষ্ঠুভাবে পাঠদান করানো কোনো অবস্থাতেই সম্ভব হচ্ছে না।
মধ্যনগর উপজেলার দরাপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক রাখি রানী সরকার বলেন, এই বিদ্যালয়টিতে পাঁচজন শিক্ষকের পদ রয়েছে। প্রধান শিক্ষকসহ চারজন শিক্ষকের পদ পাঁচ বছর ধরে শূন্য। বিদ্যালয়টিতে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত চলতি বছরে ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা ২০জন, ২০২৩ সালে ছিল ২৭জন এবং ২০২২সালে ছিল ৩৫জন। শিক্ষক সংকটের কারণে দিন দিন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। প্রায় ছয়মাস ধরে আমি একাই এখানে কর্মরত আছি। এতে করে আমার ভীষণ সমস্যা হচ্ছে।
একই উপজেলার দক্ষিণ আমজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক জান্নাতুন ফেরদৌস বলেন, এই বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষকসহ চারজন শিক্ষকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। এই বিদ্যালয়টিতে ৯২ জন ছাত্র ছাত্রীকে গত একবছর ধরে আমি একা পাঠদান করিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছিনা। দাপ্তরিক কাজে কোথাও গেলে বিদ্যালয়টিতে তালা ঝুলে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত রয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই তিনটি বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন অভিভাবক বলেন, এই দুটি উপজেলা হাওরবেষ্টিত হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো সুনজর নেই। রহস্যজনক কারণে এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক দেওয়া হচ্ছে। যে সব বিদ্যালয়ে একাধিক শিক্ষক আছেন সেসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক দেওয়া হয়। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এই কাজটি করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে।
ধর্মপাশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস বলেন, মধ্যনগর উপজেলায় আমি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছি। তিনি বলেন, এই দুটি উপজেলার সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদের তালিকা গত ২৯ এপ্রিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে সহকারী শিক্ষক পদে বিদ্যালয়গুলোতে পদায়ন করা হয়েছে। এতে আমার কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস বলেন, আমি কোনো অনিয়ম করিনি। এই জেলাতে এক হাজার ১০০ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য। কিন্তু আমরা পদায়ন করতে পেরেছি মাত্র ১৩৮ জনকে। ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার তিনটি বিদ্যালয়ে একজন করে শিক্ষক দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলে আসা বিদ্যালয়গুলোতে কোনো শিক্ষক দেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধর্মপাশার টিওর (উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার) সঙ্গে কথা বলেই আমরা বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষকদের পদায়ন করেছি। আগামী জুন মাসে শিক্ষক নিয়োগ হবে। এ সময় ছাড়া এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com