1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ০২:০৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

জন্মহার কমে যাওয়াকে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ বলছে দক্ষিণ কোরিয়া

  • আপডেট সময় শনিবার, ১১ মে, ২০২৪

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
মারাত্মকভাবে শিশু জন্মের হার কমে যাওয়াকে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, এটি মোকাবিলার জন্য একটি নতুন সরকারি মন্ত্রণালয় খোলারও পরিকল্পনা করেছেন প্রেসিডেন্ট। এ বিষয়ে সংসদে সহযোগিতা চাইবেন বলেও এক ভাষণে জানিয়েছেন তিনি।
টেলিভিশনে দেওয়া ওই ভাষণে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা জন্মহার কমে যাওয়া কাটিয়ে উঠতে দেশের সব সক্ষমতাকে এক করব। বিষয়টিকে একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের আগস্টের পর এই প্রথম কোনো সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় ইউন স্বীকার করেছেন, তাঁর প্রশাসন জনগণের জীবন উন্নত করার প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছে। তিনি তাঁর মেয়াদের পরবর্তী তিন বছর অর্থনীতির উন্নতি এবং জন্মহার কমে যাওয়ার সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বর্তমান বিশ্বে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন শিশু জন্মের হার সবচেয়ে কম। ২০২৩ সালে দেশটিতে একজন নারীর জীবদ্দশায় সন্তান জন্ম দেওয়ার হার ছিল মাত্র ০.৭২। আগের বছরের ০.৭৮ গড়ের তুলনায় যা অনেক কম। বিগত বছরগুলোর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এভাবে প্রতি বছরই শিশু জন্মের হার কমে যাচ্ছে দেশটিতে।
অভিবাসন ছাড়া কোনো দেশের নিজস্ব জনসংখ্যাকে স্থিতিশীল রাখতে হলে একেকজন মায়ের গড়ে ২.১ জন সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রয়োজন। এর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার বাস্তবতা তুলনা করলে দেখা যায়, দেশটিতে সন্তান জন্মের হার সংকটজনকভাবেই কমে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে অনেক ইউরোপীয় দেশগুলোও জনসংখ্যা কমে যাওয়ার মুখোমুখি হচ্ছে। তবে এই দেশগুলো অভিবাসনের মাধ্যমে সমস্যাটি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। বিপরীতে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং চীনের মতো দেশগুলো এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতীতের মতোই গণ অভিবাসন নীতি থেকে দূরে সরে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং চীনে জন্মহার কমতে থাকার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে স্থবির মজুরি, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়, বিবাহ এবং লিঙ্গ সমতার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ক্রমবর্ধমান হতাশা।
এদিকে এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য অর্থনৈতিক কারণ থাকলেও অর্থ ব্যয় করে সমস্যাটি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। ২০২২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন স্বীকার করেছিলেন, গত ১৬ বছরে জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য দেশটিতে ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করা হয়েছে। তারপরও পরিস্থিতির অবনতি দেখা গেছে প্রতি বছরই।
শুধু অর্থ খরচ করে নয় – পিতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানোর মতো উদ্যোগ, নতুন পিতামাতাকে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান এবং শিশুর যতœ ও গৃহকর্মে অবদান রাখতে পুরুষদের উৎসাহিত করার সামাজিক প্রচারাভিযানের পরও জন্মহার কমে যাওয়ার প্রবণতাকে উল্টোতে পারেনি দক্ষিণ কোরিয়া।
সমস্যাটির জন্য বিশেষজ্ঞ এবং দেশটির নাগরিকেরা এবার কিছু গভীর সামাজিক সমস্যাকে চিহ্নিত করেছেন। উদাহরণস্বরূপ- একক বাবা কিংবা মায়ের বিরুদ্ধে কলঙ্ক, অপ্রচলিত অংশীদারত্বের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভব এবং সমকামী দ¤পতিদের জন্য সামাজিক বাধা সমস্যাটিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
সিএনএন জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো জাপান সরকারও দ¤পতিদের সন্তান ধারণে উৎসাহিত করার জন্য একইরকম কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাপান সরকারও এ বিষয়ে জরুরি কিছু পদক্ষেপ নিতে প্ররোচিত হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সতর্ক করেছিলেন- জন্মহার হ্রাসের কারণে জাপান সামাজিক কার্যাবলি বজায় রাখতে না পারার দ্বারপ্রান্তে। সমস্যাটির ওপর ফোকাস করার জন্য একটি নতুন সরকারি সংস্থার পরিকল্পনাও ঘোষণা করেন তিনি।
কিশিদার ঘোষণা অনুযায়ী পরে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ফ্যামিলি এজেন্সি’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় জাপানে। এর মাধ্যমে শিশুর যতœ স¤পর্কিত পরিষেবা এবং শিশুদের খেলাধুলা ও বসবাসের পরিসর প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি এমন একটি সমাজ তৈরির চেষ্টা চলছে যেন সাধারণ মানুষ বিয়ে করা, সন্তান ধারণ করা এবং তাদের লালন-পালন করার বিষয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com