গতকাল বুধবার (৮ মে ২০২৪) দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রকাশিত এক সংবাদপ্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ধান-চাল সংগ্রহে কৃষককে হয়রানি করলে কঠোর ব্যবস্থা’ গ্রহণ করা হবে। বোরো মৌসুমে ধান, চাল ও গম কেনার উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চললেও জুনের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৭০ শতাংশ অর্জনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ আমরা বোরো মৌসুমে ধান, চাল ও গম কেনার উদ্বোধন করেছি। এর আগে (২১
এপ্রিল) আমরা খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় লক্ষ্যমাত্রা ও দাম নির্ধারণ করেছি।”
কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা এই যে, প্রতিবছর সরকার পক্ষ থেকে যখন ধান ক্রয় শুরু করা হয়, তার আগেই খলা থেকে মাড়াই করা ধান কৃষকের কাছ থেকে ফড়িয়ারা ক্রয় করে নেয় এবং ‘কৃষককে হয়রানি’ যতটা পর্যন্ত করা যায় চূড়ান্তমাত্রায় তার সবটাই তখনই করা হয়ে যায়, এবারও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। তাই এখন আপাতত কৃষকের গোলায় বিক্রি করার ধান না থাকায় সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ করা খুব একটা সহজ হবে না। বিদগ্ধমহলের ধারণা : প্রকারান্তরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফড়িয়াদের কম দামে ক্রয় করা ধান দিয়েই সরকারি গুদাম ভর্তি করতে হবে এবং শেষ পর্যন্ত ধানচাষের লাভটা কৃষকের ভাগে না পড়ে গিয়ে পড়বে ফড়িয়াদের ভাগে। ধান উৎপাদন করতে গিয়ে খাটবে কৃষক কিন্তু লাভ পাবে ধান উৎপাদনে জড়িত নয় এমন মধ্যস্বত্বভোগীরা, কৃষকের ভাগ্যে জুটবে লোকসান। কৃষিতে এই লুণ্ঠন বন্ধ করতে না পারলে ‘কৃষকবান্ধব কার্যক্রম’ বলে ফলাও করে প্রচারটা একটি প্রতারণা ভিন্ন অন্য কীছু হয়ে উঠবে না। এই কারণে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের সময় নির্ধারণ করতে হবে ধানকাটা শুরু হওয়ার সময় থেকে ও তাছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রতিহতকরণের ব্যবস্থাও নিতে হবে। কারও কারও মতে, ‘ধান-চাল সংগ্রহে কৃষককে হয়রানি’ করা হয়ে যাবার পর হয়রানি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া আসলেই একটি ফাঁকা আওয়াজ।