গত সোমবাবের (৬ মে ২০২৪) দৈনিক সুনামকণ্ঠে এক উদ্ধৃত সংবাদপ্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘ইউনিয়ন পরিষদেও প্রশাসক নিয়োগের বিধান হচ্ছে’ এই শিরোনামে সংবাদপ্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও জেলা পরিষদের মতো ইউনিয়ন পরিষদেও প্রশাসক নিয়োগের বিধান করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে জাতীয় সংসদে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) বিল-২০২৪’ তোলা হয়েছে।’ সংবাদবিবরণীতে এই বিল সম্পর্কে বিষদে বলা হয়েছে, “কোনও এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর বা পরিষদের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর, কার্যাবলি স¤পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করবে এবং নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন। তবে প্রশাসক নিয়োগ হবেন কেবল একবারের জন্য এবং ১২০ দিনের বেশি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। কোনও দৈব দুর্বিপাকের কারণে নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হলে সরকার এই মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়াতে পারবে। অতিমারি, মহামারি ইত্যাদি বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার এই মেয়াদ যৌক্তিক সময় পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।”
এই ‘ইউনিয়ন পরিষদেও প্রশাসক নিয়োগের বিধান’ নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা বিতর্ক চলতে পারে। আমরা সে-ব্যাপারে কোনও বিতর্কমূলক বক্তব্য দিতে চাই না। কেবল বলতে চাই, কোনও কোনও বিদগ্ধজনের মতে এই প্রয়াস আমলাতান্ত্রিকতাকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে পর্যন্ত বিস্তৃত করবে এবং তার পরিণতি হিতে বিপরীত হতে পারে। সুতরাং ইউনিয়ন পর্যায়ে জনগণের মাথার উপর প্রশাসক নিয়োগের ভাল-মন্দের দিকটি খতিয়ে দেখা দরকার। ভুলে গেলে চলবে না যে, আমাদের দেশে উন্নত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকারের গণতান্ত্রিক বিকাশকে আমরা এখনও নিশ্চিত করতে পারি নি, যেটা একটা অবশ্য করণীয় জাতীয় কর্তব্য। এই কর্তব্য থেকে বিচ্যুত হয়ে জাতীয় উন্নয়ন সার্বিক অর্থে প্রতিহত হবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। অগ্রাধিকারভিত্তিতে এটিকে আমলাতান্ত্রিকতার কবল থেকে মুক্ত করতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রশাসক নিয়েগ করে জননিয়ন্ত্রণ সম্ভব হলেও জনগণের মধ্যে গণতান্ত্রিকতার বিকাশ নিশ্চিত করা যাবে না।