জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া ::
তাহিরপুরে ধান কাটা শেষ হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তে শুকানো আর গোলায় তোলার কাজ। উপজেলার ছোট বড় ২৩ হাওর ঘুরে আর উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ৯৮ ভাগের বেশি ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে।
তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক নুরুল মিয়া। তিনি জানান, হাওরে এবার খুব তাড়াতাড়ি ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। কারণ আবহাওয়া খুবই ভাল ছিল। তবে প্রখর রোদে কিছুটা কষ্ট হয়েছে। এরপরও ভালয়-ভালয় ধান কাটা শেষ করেছি। এখন ধান গোলায় তুলবো। হাওরপাড়ে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় আমাদের কৃষিকাজ করেই বাঁচতে হবে।
উপজেলার ছোট বড় ২৩টি হাওর ঘুরে দেখা গেছে, কষ্টে ফলানো সোনার ধান খলায় শুকানো, গোলায় তুলতে ব্যস্ত রয়েছেন কিষাণ-কিষাণিরা। সাথে যোগ দিয়েছেন তাদের ছেলেমেয়েরা। এ যেন হাওরপাড়ে ঈদের আনন্দের জোয়ার বইছে।
এসময় কথা হয় শনি হাওরের কিষাণি জরিনা বেগমের সাথে। তিনি জানান, এবার ধানের বা¤পার ফলন হয়েছে। ধান কাটাও শেষ। এখন শুধু গোলায় তোলার পালা। দুই-এক দিনের মধ্যে ধান গোলায় তুলবো।
হাওরপাড়ের কৃষকদের দাবি, সরকার যেন কৃষকদের স্বার্থে বৈশাখের শুরু থেকেই ধানের মূল্য নির্ধারণ, বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণ কম মূল্যে দেয়। প্রয়োজনীয় ধানকাটার মেশিন হাওরে ব্যবস্থা করতে পারলে খরচ কমে আসবে। এতে করে লাভবান হবেন তারা। তার জন্য আগামীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানান কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হাসান উদ দৌলা বলেন, তাহিরপুরে চলতি মৌসুমে ১৭ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এতে ৮০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি চাল উৎপাদন হবে। যার মূল্য ২৪৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার বেশি। উপজেলায় ধান কাটা প্রায় শেষে। আমরা চাষাবাদের শুরু থেকেই কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আর আবহাওয়া খারাপ হবার আশঙ্কা থাকায় কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার কাজ শেষ করার পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষকরা এখন ধান শুকিয়ে গোলায় তোলা আর খড় শুকিয়ে উঁচু জায়গায় রাখতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।