মো. বায়েজীদ বিন ওয়াহিদ ::
জামালগঞ্জে দীর্ঘদিন যাবত এসিল্যান্ড না থাকায় ভোগান্তিতে রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ডের পদ প্রায় ৫ মাস ধরে শূন্য রয়েছে। এতে উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে এসে নামজারি, (খারিজ) মিসকেস, তদন্ত রিপোর্ট, ভূমি রেজিস্ট্রি পূর্ববর্তী কাজ, ভূমি উন্নয়নকর পরিশোধসহ নানা ধরনের সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকায় যদিও ভারপ্রাপ্তের দায়িত্বে আছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা। কিন্তু তিনি গত জানুয়ারিতে সমাপ্ত হওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন, চলতি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ তদারকিসহ নিজ কার্যালয়ের নিয়মিত কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে ভূমিসংক্রান্ত কাজে খুব বেশি সময় দিতে পারছেন না বলে জানাযায়। আর এতে গত ৫ মাসে প্রায় সহ¯্রাধিক নামজারি আবেদন ও মিসকেস জমা পড়েছে। যার দরুন উপজেলার জমির মালিকসহ অন্যান্য উপজেলার জমির মালিকরা প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাযায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এসিল্যান্ড হিসেবে জামালগঞ্জ উপজেলায় যোগদান করেন তনুকা ভৌমিক। প্রায় এক বছর পর গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে অন্যত্র বদলি করা হয় তনুকা ভৌমিককে। এরপর থেকেই দীর্ঘ ৫ মাস যাবত এসিল্যান্ডের পদ শূন্য।
উপজেলা ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলা ভূমি অফিস একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় হওয়ায় এসিল্যান্ড ন্যস্ত করা জরুরি হওয়া স্বত্বেও এখানে কোনো অফিসার না থাকায় কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। একজন এসিল্যান্ডকে নামজারি, খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদান, মিসকেস, তদন্ত রিপোর্ট ও ভূমি উন্নয়ন কর আদায়সহ নানা ধরনের কাজ করতে হয়। কিন্তু তিনি না থাকায় এসব কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে। আবার প্রাথমিক জটিলতা ধরা পড়লেও সহজে সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া সহস্রাধিক নামজারি আবেদনসহ মিসকেস ও ভূমি সম্পর্কিত অনেক কাজ ঝুলে আছে। অফিস খোলা থাকলেও কর্মকর্তা না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সময়মতো হচ্ছে না। এ কারণে সেবা ব্যাহত হচ্ছ। দিনের পর দিন ঘুরেও নামজারি ছাড়া জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। কবে নতুন এসিল্যান্ড আসবেন তাও জানেন না কেউ।
এ ব্যাপারে কথা হয় জামালগঞ্জের বাসিন্দা মো. সাত্তার মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, নামজারি করার জন্য গত তিন মাস আগে আবেদন জমা দিয়েছি। অফিস থেকে জানিয়েছে স্যার নাই, তাই নামজারি করা দেরি হচ্ছে। কবে পাবো সেটাও জানি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ভুক্তভোগী জানান, বারবার এসে ফিরে যাচ্ছি। মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা প্রয়োজন। নামজারি করতে না পারায় জমি বিক্রি করতে পারছিনা। এসিল্যান্ড স্যার কবে আসবে তাও জানিনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসিল্যান্ড না থাকায় একটু অসুবিধা তো হচ্ছেই। আমি আমার দপ্তরের কাজ শেষ করে চেষ্টা করছি ভূমি অফিসে সময় দেবার। তাছাড়া নতুন এসিল্যান্ড নিয়োগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। আশা করছি খুব শীঘ্রই এসিল্যান্ড যোগদান করবেন।