স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের ইসলামগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে অভিভাবক সমাবেশ ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে রবিবার বিকালে কলেজ মাঠে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
এ সময় তিনি বলেন, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষার উন্নয়নে হিংসা-বিদ্বেষের ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করতে হবে।
জিল্লুর রহমান বলেন, দেশ স্বাধীনের পর থেকে যারা সুনামগঞ্জের উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবুও উন্নয়নমূলক কাজ তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে। অনেক কম। আগামীতে আমাদের গৌরারং ইউনিয়নের সকল উন্নয়নমূলক কাজ এগিয়ে নিতে সকলে মিলে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আজ ইসলামগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ হাঁটি হাঁটি পা পা করে সেরা কলেজে রূপান্তর হচ্ছে। তা ভাবতেও অবাক লাগে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের সাথে পাল্লা দিয়ে শিক্ষার গুণগত মানেও এগিয়ে নিতে হবে কলেজকে। এই জন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
জিল্লুর রহমান বলেন, এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে অনেকে কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এই ত্যাগের ফসল আজকে আমরা নিজ চোখে দেখছি। কলেজের কয়েকটি ভবনের কাজ এখন চলমান রয়েছে। ধীরে ধীরে হাওর এলাকার এই কলেজ হবে দৃষ্টিনন্দন একটি কলেজ। সেই সাথে খেলার মাঠ হতে হবে আয়নার মতো। দেখতে চমৎকার। করতে হবে পরিকল্পিত সুন্দর ফুলের বাগান। সবাই দেখবেন গৌরারং ইউনিয়নের প্রাণ হবে এই কলেজ।
তিনি আরও বলেন, এই এলাকার সুনামগঞ্জ-সাচনা সড়ক এবার যেভাবে উন্নয়ন হয়েছে তা আর কোনো সময় হয়নি। পরিচিত ও ভালো ঠিকাদার ছিল বলেই ভাল কাজ হয়েছে। এভাবে ইউনিয়নের সকল স্থানের কাজ করাতে সকলে একতাবদ্ধ থাকতে হবে।
পরে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী কলেজের মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন। একই সাথে জগাইরগাঁও প্রাইমারি স্কুলের উন্নয়নের জন্য আরও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইসলামগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. নুরুজ আলী। তিনি বলেন, ইসলামগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে যেসব শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, তাদের কলেজে আসা যাওয়ার খোঁজ-খবর নিতে হবে সকল অভিভাবকদের। মাত্র কয়েক ঘণ্টা অধ্যয়নের পর সে কোথায় যায় বা যায় না তা খেয়াল রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমি আজ ১৫ দিন হয় এই কলেজে যোগদান করেছি। সকল শিক্ষকদের সভা করে বলেছি, আমি সকল শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় ভাল ফলাফল দেখতে চাই। শিক্ষকেরা কথা দিয়েছেন। তাদের সাথে সহযোগিতা করতে হবে অভিভাবকদের। কলেজের শিক্ষার মান ভাল করতে সকলের সহযোগিতা চান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী মান্নান, গৌরারং ইউপি চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, শিক্ষানুরাগী ও ৩ বারের নির্বাচিত গৌরারং ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. শাহাব উদ্দিন, শিক্ষানুরাগী ও অ্যাড. আতিকুর রহমান, শিক্ষানুরাগী মো. আবুল কাশেম জাকির, শিক্ষানুরাগী হাজী
মো. মুক্তার আলী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি শাহ মো. ফয়জুন্নুর আলী।
সহকারী অধ্যাপক ফজলুল করীম সাইদের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তাহিরপুর উপজেলার জয়নাল আবেদীন মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সুধীন চন্দ্র পাল, কলেজের প্রভাষক ফজলুল হক দোলন, ইয়াকুবিয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোল আহমদ, লবজান চৌধুরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুছ সাত্তার, আব্দুস সাত্তার মরিয়ম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান, ইসলামগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাবের সবাকে সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, বিশিষ্ট সমাজসেবক হাজী মুক্তার আলী, আবুল কাসেম জাকির, অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক ফজলুল হক, কলেজের অভিভাবক সদস্য বশির আহমদ, শিক্ষার্থী জুনায়েদ মিয়া ও পূজা মন্ডল।
অনুষ্ঠান শেষে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান এবং গীতা থেকে পাঠ করেন শিক্ষার্থী ঈশিতা চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান কলেজ কর্তৃপক্ষ। আলোচনা সভা শেষে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ। এর আগে কলেজের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী মান্নানকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।