স্টাফ রিপোর্টার ::
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘ছায়ামন্ত্রী’ হয়েছেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এমএ মান্নান। তাঁকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে। সংবিধানের ৭৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতিক্রমে চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী কমিটি গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ¯িপকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে কমিটি গঠন করা হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যরা হলেন- মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, রফিকুল ইসলাম, ড. বীরেন শিকদার, মো. আব্দুর রাজ্জাক, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, মো. আবদুস সবুর, এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া সজ্জন রাজনীতিবিদ এমএ মান্নানকে অর্থ মন্ত্রণালয় স¤পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মন্ত্রণালয় স¤পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি অনেকটা ছায়ামন্ত্রীর মতোই। নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি, তদারকি ও কাজে গতিশীলতা আনতে সংসদীয় কমিটি করার রেওয়াজ আছে সংসদে। আট থেকে ১৫ সংসদ সদস্যের ওই কমিটিতে একজন থাকেন সভাপতি। আর স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাধারণত হন সাবেক মন্ত্রী বা জ্যেষ্ঠ কোনো সংসদ সদস্য।
নির্বাচনের পর নতুন সরকার ৩৯টি মন্ত্রণালয়ের বিপরীতে ৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করেছে। তিন মন্ত্রণালয় নিজের কাছে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাকি ২৫টিতে মন্ত্রী ও ১১টিতে প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হয়েছে। তাদের নেতৃত্বেই মূলত চলবে মন্ত্রণালয়। তবে রেওয়াজ অনুযায়ী, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কাজের তদারকি করবে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৭৬ অনুচ্ছেদের দফা (১)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, সংসদ সদস্যদের নিয়ে সংসদ (ক) সরকারি হিসাব কমিটি, (খ) বিশেষ অধিকার কমিটি এবং (গ) সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিতে নির্দিষ্ট অন্যান্য স্থায়ী কমিটি গঠন করবে। দফা (২)-এ সংসদীয় কমিটির ক্ষমতা ও কার্যাবলির বর্ণনা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কমিটি সংবিধান ও অন্য কোনো আইন সাপেক্ষে (ক) খসড়া বিল ও অন্যান্য আইনগত প্রস্তাব পরীক্ষা করতে পারবে; (খ) আইনের বলবৎকরণ পর্যালোচনা এবং অনুরূপ বলবৎকরণের জন্য ব্যবস্থাদি গ্রহণের প্রস্তাব করতে পারবে; (গ) জনগুরুত্বস¤পন্ন বলে সংসদ কোনো বিষয় স¤পর্কে কমিটিকে অবহিত করলে সে বিষয়ে কোনো মন্ত্রণালয়ের কাজ বা প্রশাসন বিষয়ে অনুসন্ধান বা তদন্ত করতে পারবে; কোনো মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি সংগ্রহ এবং প্রশ্নাদির মৌখিক বা লিখিত উত্তর লাভের ব্যবস্থা করতে পারবে; এবং (ঘ) সংসদ কর্তৃক অর্পিত অন্য যে কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবে।
অর্থাৎ, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কাজের সার্বিক তদারকির মাধ্যমে সরকার পরিচালনায় বিশেষ গুরুত্ব ধারণ করে এই সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বা ‘ছায়া-মন্ত্রিসভা’।