মধ্যনগর প্রতিনিধি ::
মধ্যনগরে হাওরে গোপাট (হাওরের জমির ধান পরিবহন করে আনা নেওয়ার জন্য ও কাটা ধান রাখার নির্ধারিত স্থান) কেটে বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করে সংশ্লিষ্ট পিআইসি’র লোকজন। তবে স্থানীয় কৃষক-গ্রামবাসীর ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের এই অপকর্মের প্রতিবাদ জানান এবং কাজটি বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা ওই গোপাটের কাটা স্থান ভরাটের আশ্বাস দিলে রবিবার দুপুর থেকে ফের এই বাঁধের কাজ শুরু হয়। মধ্যনগর উপজেলার চামরদানি ইউনিয়নের আলীহারপুর গ্রাম সংলগ্ন রুই বিল হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের ৩২নং প্রকল্পের কাজে ঘটনাটি ঘটে।
মধ্যনগর উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রুই বিল হাওরটি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন। এই হাওরের ৩২নং প্রকল্প কাজটি উপজেলার চামরদানি ইউনিয়নের আলীহারপুর ও বলরামপুর গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। ফসলরক্ষা বাঁধের এই প্রকল্প কাজের সভাপতি হলেন উপজেলার আলীহারপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব হলেন একই গ্রামের মোতাহার হোসেন চৌধুরী। ৩৪০মিটার দৈর্ঘ্যরে এই বাঁধের কাজের বিপরীতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫১২টাকা। এই পিআইসির সভাপতি ও সদস্য সচিবের নির্দেশে গত শনিবার সকাল সাতটা থেকে আলীহারপুর গ্রামের সামনে থাকা গোপাট এস্কেভেটর দিয়ে কেটে সেই মাটি বাঁধে ফেলার কাজ শুরু করা হয়। খবর পেয়ে ওইদিন সকাল ১০টার দিকে শতাধিক কৃষক ও গ্রামবাসী সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয়ে গোপাট থেকে মাটি উত্তোলন কাজটি বন্ধ করে দেন। এতে করে বাঁধ নির্মাণ কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে যান মধ্যনগরের ইউএনও অতীশ দর্শী চাকমা। পরে গ্রামবাসীর সঙ্গে তিনি আলোচনা করে গোপাটের কাটা স্থান ভরাট করার জন্য আশ্বাস দিলে সেই বাঁধ নির্মাণের কাজটি ফের শুরু হয়।
উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াসিল আহমেদ ও ওই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, রুই বিল হাওরের আওতায় টগার হাওরে আমাদেরও বোরো জমি রয়েছে। পিআইসির সভাপতি সাইকুল ইসলাম ও সদস্য সচিব মোতাহার হোসেন চৌধুরী নির্দেশে আমাদের গ্রামের সামনে থাকা গোপাটের বেশ কিছু অংশ এস্কেভেটর দিয়ে কেটে সেই মাটি বাঁধে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় কৃষক ও গ্রামবাসীর বাধায় ফসলরক্ষা বাঁধের কাজটি বন্ধ ছিল। ইউএনওর স্যারের তৎপরতায় এই বিষয়টির সমাধান হয়েছে।
রুই বিল হাওরের ৩২নং প্রকল্পের পিআইসির সভাপতি সাইকুল ইসলাম বলেন, যেখান থেকে মাটি কেটেছি সেটি আমার রেকর্ডিয় জায়গা। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সঠিক নয়।
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান করেছি। গোপাটের যেটুকু স্থান কেটে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে সেই কাটা স্থানটি মাটি দিয়ে ভরাট করার জন্য পিআইসির সভাপতি ও সদস্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।