স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জগাইরগাঁও এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় গৌরারং ইউনিয়নের ১৮নং প্রকল্পের ‘ফসলরক্ষা বাঁধ’ ‘অপ্রয়োজনী’য় বলে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা মন্তব্য করেছেন। এই কাজ বাস্তবায়ন করছে গত বছরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) নির্ধারিত সদস্যরা। এই বাঁধ নির্মাণকাজে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা।
শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জগাইরগাঁও গ্রামের পাশে সুনামগঞ্জ-টুকেরবাজার যাতায়াতের পাকা সড়ক থেকে সুরমা নদীরপাড় পর্যন্ত এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বাঁধের পাশে থাকা ‘মিয়ার খাল’ নামের খাল থেকে মাটি উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ করেছেন পিআইসির সদস্যরা। এস্কেভেটরের মাধ্যমে বাঁধের গোড়া থেকে চওড়া করে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। এতে গ্রামের মানুষের ফসলি জমিতে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এতে কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে। এছাগা খালের পাড়ে থাকা মরিচের চাষ, রসুন, বিভিন্ন প্রকারের সবজি চাষ, জালাচারা নষ্ট করে মাটি উত্তোলন করা হয়েছে।
অপরদিকে, বাঁধ নির্মাণে খালেরপাড়ের বাসিন্দাদের গাছ, বাঁশঝার প্রভৃতি বৃক্ষ কর্তন করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীদের উদ্যোগে বাঁধের মাটি আটকাতে খালের তীরজুড়ে বাঁশের বেরিকেড দেয়া হলেও ঢালুতে মাটি ভরাট করে দেয়া হয়নি। এমন অভিযোগ গ্রামের একাধিক বাসিন্দার।
স্থানীয়রা জানান, এবার এই বেড়িবাঁধ কমিটির সদস্যরা সুকৌশলে দ্রুততার সাথে প্রাথমিক নির্মাণকাজ শেষ করেছেন। বাঁধের উচ্চতা ছিল মূল মাটি থেকে সর্বোচ্চ ৩ ফুট, ঢালু ছিল সর্বোচ্চ ১৫ ফুট। প্রস্থ ১২ ফুট। কিন্তু বাঁধ নির্মাণে কোনো নির্দেশনা মানা হয়নি। প্রাথমিকভাবে বাঁধ নির্মাণকাজ মনগড়াভাবে করা হয়েছে। এই বাঁধে পাহাড়ি ঢল থেকে ফসলি জমি রক্ষা পাবে না বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা। তারা এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেন, আব্দুল জলিল, নাঈম আহমদসহ অনেকে এই বাঁধকে অপ্রয়োজনীয় বাঁধ বলে মন্তব্য করে জানান, এই সড়কে পুরাতন মাটির উপর নতুন মাটির প্রলেপ দেয়া হয়েছে। মানুষ চলাচলের সড়ক হিসাবে সব সময় ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু গাছ-পালা, ফসলি জমি নষ্ট করে সরকারি জায়গা মিয়ারখালের মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা উচিত নয়। সরকার তো মাটির ক্রয়ের বরাদ্দ দিয়েছে। এই বাঁধের মাটি বৃষ্টি হলেই খালে চলে যাবে। এটার সুষ্ঠু তদন্ত জরুরি প্রয়োজন।
অভিযোগ রয়েছে আড়ালে থেকে পিআইসি থেকে সুবিধা নিচ্ছে গ্রামের বাসিন্দা আবুল বরকত। তিনি বলেন, আমরা সরকারি মিয়ার খালেরপাড় থেকে মাটি উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ করেছি। সঠিকভাবেই করেছি। গ্রামের মানুষের নানা মত থাকতে পারে। তাতে কিচ্ছু আসে যায় না আমাদের।
পিআইসির সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, আমরা সরকারি খালের মাটি উত্তোলন করেছি। এতে গ্রামের মানুষের কিসের অভিযোগ। আমরা ঠিক কাজ করেছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের ১৮নং পিআইসির বিষয়ে দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।