1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নির্বাচন ঘিরে যেভাবে সাজানো হচ্ছে নিরাপত্তাব্যবস্থা

  • আপডেট সময় সোমবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৪

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিবেশ ঘিরে এবারের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। গত ২৮ অক্টোবর থেকেই রাজনীতির মাঠে অস্থিরতা বিরাজ করছে। অবরোধ-হরতাল ও নাশকতা-সহিংসতা যেমন চলছে, তেমনি আটক-গ্রেফতারসহ কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসবের মধ্যেই আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সার্বিক বিষয়গুলো মাথায় রেখেই এবার জাতীয় নির্বাচনে সাজানো হচ্ছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এবার বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো ভোট বর্জনের ডাক দেওয়ায় ভোটকেন্দ্রগামী ভোটারদের নিরাপত্তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনি এলাকায়ও সংঘর্ষ-সহিংসতার শঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার পাশাপাশি ভোটারদের বাসস্থান থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছাতে নিরাপত্তা পরিকল্পনার ডালা সাজানো হয়েছে।
এবার সারাদেশে এক লাখ ৮৯ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকছেন। তারা নির্বাচনের সময় টহল দেওয়া থেকে শুরু করে স্ট্রাইকিং টিম ও ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। এমনকি ওই দিন যিনি থানার সিসি লিখবেন, তিনিও থাকবেন নির্বাচনি দায়িত্বে।
ইতোমধ্যে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারা দেশে মাঠে নেমেছে র‌্যাব, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসার, এপিবিএন এবং কোস্টগার্ড। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই সংস্থাগুলো নিরাপত্তা রক্ষায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, রাজধানীসহ সারা দেশে সংস্থাটির ১ হাজার ১৫১ প্লাটুন মাঠে নেমেছে। ভোট ঘিরে শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) থেকে ১৩ দিন পুলিশ, র‌্যাব, সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে মাঠে থাকবে তারা।
র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) জানিয়েছে, নির্বাচনের নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে র‌্যাব। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে তারা।
শুক্রবার থেকে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ৮ হাজার ৫০০ আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা রিটার্নিং অফিসারের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে মোবাইল, স্ট্রাইকিং ও রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে আগামী ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে মেট্রোপলিটন এলাকা ও জেলাগুলোয় সহায়তার লক্ষ্যে সারাদেশে ২০০ প্লাটুন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) মোতায়েন রাখা হয়েছে।
এপিবিএন ফোর্স ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোতায়েন থেকে দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার ৪৩টি ইউনিয়নে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বর সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের জারি করা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় এবং নির্বাচনের পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে সহায়তা করার জন্য ৩ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে সেনা সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। তারা ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনের অনুরোধ বিবেচনা করে আগামী ৩ থেকে ১০ জানুয়ারি দেশের ৩০০টি নির্বাচনি এলাকায় ‘ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করা হবে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানায়, এবার ৫ লাখ ১৬ হাজার আনসার, ১ লাখ ৮২ হাজার ৯১ পুলিশ, ৪৬ হাজার ৮৭৬ বিজিবি, ২ হাজার ৩৫০ কোস্টগার্ড ও র‌্যাবের ৭০০-এর অধিক টহল থাকবে। তাদের সঙ্গে ভোটের মাঠে থাকবে সশস্ত্র বাহিনী। এছাড়া মাঠে থাকবে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। ইতোমধ্যে সারাদেশে ২০০ এপিবিএন ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি, অপারেশন) আনোয়ার হোসেন বলেন, নির্বাচনি এলাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তা কোনও অভিযোগ পেলে তার প্রতিকারের ব্যবস্থা নিচ্ছেন। আর তাদের সহযোগিতা করছে পুলিশ। কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসাররা যেভাবে নিরাপত্তার নির্দেশনা দেবেন, পুলিশ সেভাবে কাজ করবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। কোনও কোনও দুর্গম এলাকার কেন্দ্রও ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলোর বিষয়েও বাড়তি ফোর্স দিয়ে কাজ করছে পুলিশ। পুলিশ অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সর্বাত্মক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে একটি পক্ষ রেলে আগুনসহ নাশকতামূলক কর্মকা- ঘটাচ্ছে। রেল পুলিশের মাধ্যমে রেলের নিরাপত্তায় বিভিন্ন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইপি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
একই প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান বলেন, ভোটকেন্দ্রে কী ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে হবে, সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবো। পাশাপাশি যেকোনও ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবো। এ বিষয়ে মাঠ পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটে ১১ কোটি ৯৭ লাখ ভোটার ৪২ হাজার ১০৩টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষ থাকবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৫ থেকে ১৭ জন নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত থাকবে। স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করবে সশস্ত্র বাহিনী। ভোটকেন্দ্রের ভেতর গুরুত্ব অনুযায়ী দুই থেকে চার জন পুলিশ সদস্য ও দুজন আনসার সদস্য আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দায়িত্বে থাকবেন। বাকি আনসার ও দফাদার লাঠি নিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রধারী পুলিশ-আনসারের সংখ্যা থাকবে গড়ে পাঁচ জন। সেই হিসাবে সারাদেশে ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রধারী পুলিশ ও আনসার সদস্য থাকবেন দুই লাখেরও বেশি।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com