শহীদনূর আহমেদ ::
সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনি এলাকায় পুরোদমে বইছে ভোটের হাওয়া। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থী, কর্মী, সমর্থকরা প্রচার-প্রচারণায় ততই ব্যস্ত হয়ে উঠছেন। জয় পেতে এই আসনের তিন হেভিওয়েট প্রার্থী রনজিত সরকার (নৌকা প্রতীক), মোয়াজ্জেম হোসেন রতন (কেটলি প্রতীক) এবং সেলিম আহমদ (ঈগল প্রতীক) মরিয়া হয়ে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই এলাকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, এই আসনে তিন হেভিওয়েট প্রার্থী রনজিত সরকার, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও সেলিম আহমদের মধ্যেই হবে ত্রিমুখী লড়াই।
জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ভোটার ও আয়তনের দিক দিয়ে সর্ববৃহৎ নির্বাচনী আসন সুনামগঞ্জ-১ (জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধর্মপাশা, মধ্যনগর)। ৪টি উপজেলা ও ২৩টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত আসনটিতে সাড়ে ৪ লাখ ভোটারের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৮ জন প্রার্থী। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, পিপলস পার্টিসহ একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে মূল আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী রনজিত সরকার এবং দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও সেলিম আহমেদ।
স্থানীয়রা জানান, প্রথমবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনি এলাকায় প্রচার প্রচারণায় সাড়া ফেলেছেন রনজিত সরকার। এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর সর্মথকরা মনে করছেন, তৃণমূল পর্যায়ে দলকে সুসংহত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্বে পরিবর্তন করে রনজিত সরকারকে জয়ী করবে সাধারণ মানুষ।
এদিকে মনোনয়নবঞ্চিত হলেও নির্বাচনে ছাড় দিতে রাজি নন বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। নির্বাচনে তিনি কেটলী প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। টানা তিন মেয়াদের ক্ষমতায় থাকায় তাঁর নির্বাচনী এলাকায় একটি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে মনে করছেন তার কর্মী এবং সমর্থকরা। তারা সমর্থকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, মাঠ পর্যায়ে রতন যথেষ্ট সাড়া ফেলেছেন। উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে চতুর্থবারের মতো বর্তমান সংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে বেছে নিতে পারেন ভোটাররা।
অপরদিকে প্রথম বারের মতো সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে আলোচনায় রয়েছেন তরুণ রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী সেলিম আহমেদ। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ঈগল। তৃণমূল পর্যায়ে দীর্ঘদিন বিভিন্ন সামাজিক কাজে জড়িত থাকায় নির্বাচনী এলাকায় তাঁর একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁর সমর্থকরা। নির্বাচনী এলাকায় তার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনুসারী থাকায় জয়ের পাল্লায় সেলিমকে এগিয়ে রাখছেন সমর্থকরা।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী রনজিত সরকার বলেন, আমি দীর্ঘদিন আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছি। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে এখনো মানুষের সাথে কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী আমার সাংগঠনিক কার্যক্রমের মূল্যায়ন করে নৌকা হাতে তুলে দিয়েছেন। বিগত সময়ে আমার নির্বাচনি এলাকা উন্নয়নবঞ্চিত ছিল। বর্তমান সংসদ সদস্য জনগণের উন্নয়নের চেয়ে নিজের উন্নয়ন বেশি করেছেন। তার সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতি সবার জানা। আমি মাঠপর্যায়ে যথেষ্ট সাড়া পেয়েছি। মানুষ পরিবর্তন চায়। আমি আমার জয়ের ক্ষেত্রে আশাবাদী।
স্বতন্ত্রপ্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, আমি তৃণমূলের চাহিদার কারণে নির্বাচনে এসেছি। বিগত সময়ে আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় যে উন্নয়ন করেছি তা ইতোপূর্বে আর হয়নি। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী আমার সাথে রয়েছেন। ভোটাররা আমাকে ভোট দিতে চায়। কেউ কেউ তাদের বক্তব্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন- জোর করে জয়ী হবে। এটা হবে না। আমি আমার জয়ের ক্ষেত্রে আশাবাদী।
স্বতন্ত্রপ্রার্থী সেলিম আহমেদ বলেন, মানুষ চায় উন্নয়ন। আমি মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষ আমার সাথে রয়েছেন। তারা পরিবর্তন চায়। তারা আমাকে নেতৃত্বে দেখতে চায়। জয়ের ক্ষেত্রে শতভাগ আশাবাদী।