স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মাঠে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে তাদের সঙ্গে আড়ালে থাকা দলের পদবীধারী অনেক নেতাকর্মী প্রকাশ্যে নির্বাচনী মাঠে কাজ করছেন। এ অবস্থায় দুই স্বতন্ত্রে নৌকা ডুবির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তারা জানান, যারা নৌকার প্রার্থী হয়ে আগের নির্বাচনগুলোতে নির্বাচিত হয়েছিল তারা এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাদের চেয়ে নতুন প্রার্থীদের অবস্থান কোনো অংশে কম নয়। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের অবস্থানও আশাব্যঞ্জক। নৌকা জয়ের বন্দরে পৌঁছতে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে পারে। আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নৌকাডুবির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসাইন জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা উন্মুক্ত নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ায় এবং ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক ওবায়দুল কাদেরও এসব প্রার্থীদের কেন্দ্রীয় আদেশ ছাড়া বহিষ্কার কার্যকর হবে না এমন ঘোষণা দেওয়ায় অনেকটা ভারমুক্ত আছেন এসব প্রার্থীরা।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট রনজিত সরকারকে। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও সুনামগঞ্জ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে নানাভাবে আহ্বান জানালেও কোনো কাজ হয়নি। বরং নির্বাচনী মাঠে তিন জনেরই বিপুল জনবল থাকায় এবং ভোটারদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা থাকায় এই আসনে ত্রিমুখী ভোট যুদ্ধে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই এই আসনে ত্রিমুখী লড়াইয় হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
সুনামগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার জানান, আমার নেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সুনামগঞ্জ-১ আসনে যে উন্নয়ন করেছেন তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে পাঠিয়েছেন। আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের ভোটারগণ আমাকে গ্রহণ করেছে। তারা আমাকে তথা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে মাঠে কাজ করছে। নৌকার বিজয় হবেই।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিম আহমেদ বলেন, আমি ভোটার ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের যে কথা দিয়েছিলাম তা রেখেছি, নির্বাচন করছি। দীর্ঘদিন ধরে মাঠে নানাভাবে নেতাকর্মীদের সুখে দুখে পাশে থেকেছি। সবাই আমাকে চাইছে, প্রচারণায় ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছি; দলীয় নেতা কর্মীরা আমার সঙ্গে আছেন। আমাকে নির্বাচন থেকে সরানোর জন্য নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের ভোটারের দোয়া রয়েছে আমার সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত আমি আছি আর থাকব, লড়াই করে যাব; বিজয় আমারই হবে।
আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, আমি এলাকায় কোন বিভেদ, বিশৃঙ্খলা, চাঁদাবাজি, রাহাজানি সন্ত্রাসী-নৈরাজ্যের সৃষ্টি করিনি, কাউকে করতে দিইনি। এলাকার উন্নয়ন করেছি শেখ হাসিনা নেতৃত্বে। তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থকসহ সর্বমহলে আমার জনপ্রিয়তা রয়েছে; তার প্রমাণ হবে ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন।