1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

আইনের যথাযথ প্রয়োগ চাই

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩

‘চাঁদা না পেয়ে বৃদ্ধ ব্যবসায়ীকে বেধড়ক মারধর’ এমন শিরোনামে সংবাদ ছাপা হয়েছে দৈনিক সুনামকণ্ঠে। অবাক হওয়ার তাতে কোনও কীছু নেই। সমাজে প্রকাশ্যে এমনটা হচ্ছে অথচ প্রশাসনের সকাশে যাওয়ার আগে সমাজের কেউ তার প্রতিবাদে এগিয়ে আসছে না। এতে প্রমাণ হচ্ছে, আসলে আমাদের সমাজটা একটা বর্বর সমাজে পর্যবসিত হয়ে গেছে। বিপদ-আপদে মানুষ মানুষের জন্য এগিয়ে আসছে না। প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেক মানুষের থেকে আলাদা হয়ে গেছে। আত্মস্বার্থ ব্যক্তি মানুষকে সমাজের যৌথতা থেকে, প্রথাগত মূল্যবোধ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তোলেছে। সামাজিক শৃঙ্খলা একেবারেই ভেঙে পড়েছে এবং মূল্যবোধ নিঃশেষ হয়ে গেছে ব্যক্তিগত চেতনা থেকে। অথচ সমাজে বিদ্যমান উৎপাদন সম্পর্কের ভিত্তিতে মানুষের মনে মূল্যবোধ উৎপন্ন হয়। অন্যায় অবিচার, বর্বর আচরণ, আইনভঙ্গ করা, নিয়ম না মানা একশ্রেণির মানুষের প্রাতিস্বিক কর্ম হয়ে উঠেছে। আলোচ্য সংবাদ থেকে জানা যায়, একজন যুবক একজন বৃদ্ধ দোকানীর কাছে চাঁদা আদায় করে নিয়মিতভাবে, বৃদ্ধ চাঁদা দিতে অস্বীকার করে চাঁদাবাজ যুবকের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন। এমন চাঁদাবাজির ঘটনা তো কেবল একটি মফস্বল শহরের কোনও পাড়ামহল্লায় ঘটছে না, এই চাঁদাবাজি গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে আছে। উদাহরণ দিয়ে রচনার বহর বাড়াতে চাই না।
কোথায়, কখন, কেন, কীভাবে ‘চাঁদা না দেওয়ার অপরাধে’ বৃদ্ধকে মারধরের এমন ঘটনা ঘটেছে তার বয়ান হাজির করার কোনও স্বার্থকতা আছে বলে তখনই প্রতিপন্ন হবে যখন এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সমাজ পরিসরে আইনি ব্যবস্থাপ্রকরণ কার্যকর হয়ে প্রতিকার করতে সমর্থ হবে। অর্থাৎ কোনও সমাজসাংস্থিতিক পরিসরে প্রতিষ্ঠিত প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যখন সমাজে সংগঠিত অন্যায়-অবিচারের আইনি উপায়ে ন্যায়সঙ্গত প্রতিকার উৎপাদন সম্ভব হবে প্রকৃতপ্রস্তাবে তখনই সমাজটা অসুস্থতা থেকে সুস্থতায়, অশান্তি থেকে শান্তিতে, বিশৃঙ্খলা থেকে শৃঙ্খলায়, হিং¯্রতা থেকে শুশ্রƒষায় পর্যবসিত হবে। কিতাবি ভাষায় সামাজিক সুস্থতা, শান্তি, শৃঙ্খলা, ন্যায় ইত্যাদি কল্যাণকর সামাজিক প্রপঞ্চের প্রতিষ্ঠা করে ফেলা যেমন সহজ তেমনি কঠিন সমাজপরিসরে তার বাস্তবায়ন। আমাদের সংবিধানে সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার অঙ্গিকার করা হয়েছে, অথচ দেশে সে-ন্যায় প্রতিষ্ঠা কীছুতেই সম্ভব হচ্ছে না। কিতাবে আইন আছে কিন্তু মাঠপর্যায়ে বা সমাজপরিসরে কার্যকর হচ্ছে না। টাকার জোরে, রাজনীতির জোরে, প্রভাব প্রতিপত্তির জোরে কিংবা পেশীশক্তির জোরে আইন নিজস্ব নিয়মে কার্যকর হচ্ছে না।
নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা কার্যকর হলে ‘চাঁদা না দেওয়ার বিষয়টি বৃদ্ধের জন্য অপরাধে’ এবং চাঁদাবাজ যুবকের জন্য চাঁদাবাজি একটি পেশায় পর্যবসিত হতো না। আইনকে কার্যকর করতে হবে এমনভাবে যে, অন্যায় করতে কেউ সাহসী হয়ে না উঠে। আইনের প্রয়োগের ফাঁকে যতোদিন অপরাধ করার মওকা থিতু হয়ে থাকবে ততো দিন পর্যন্ত এবংবিধ অত্যাচারে সমাজ জর্জরিত হবেই। দেশে আইনের যথাযথ প্রয়োগ চাই, আইনপ্রয়োগকর্তাকে সে-প্রতিশ্রুতি রক্ষার প্রেক্ষিতেই তাঁর চাকরি বহাল থাকার নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আইনের অপব্যবহার রোধ হবে না এবং সমাজপরিসরে অন্যায়, অপরাধ সংঘটিত হতেই থাকেব। চাঁদা না দিলে বৃদ্ধ কোনও এক যুবকের হাতে মার খাবেন, তেমনটাই হবে প্রকৃত সমাজবাস্তবতা।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com