স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ-৪ আসন জেলার ‘নিবার্চনী সদর দপ্তর’। সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটি স্বাধীনতার পর থেকে রাজনৈতিক ইতিহাস ঐতিহ্যের দিক দিয়ে তাৎপর্য বহন করছে। দীর্ঘদিন পর এই আসনে নিজেদের প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী আবহে আমেজ বিরাজ করলেও শরীক দলের আসন ভাগাভাগির হিসেবে এখনও পরিষ্কার হচ্ছেনা। কেননা জোটের প্রার্থী হিসেবে টানা দুইবার সুনামগঞ্জ ৪-এর প্রতিনিধিত্ব করছেন জাতীয় পার্টির এমপি অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগিতে কোনো মেরুকরণ না হলে জেলার এই আসনটিই সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট হবে বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক বনাম জাতীয় পার্টির প্রার্থীর অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ’র মধ্যে ভোটযুদ্ধে জয়ের ট্রামকার্ড হতে পারে হালুয়ারঘাট-ধারারগাঁও সেতু ইস্যু। জানাগেছে, দুই প্রার্থী নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে থাকছে এই জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুর ইস্যুটি। ভোটার ও সমর্থকদের প্রভাবিত করতে সেতু বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতি হতে পারে প্রার্থীদের নির্বাচনী ইশতিয়ারের অন্যতম বিষয়।
জানা যায়, সুনামগঞ্জর সদর উপজেলার সুরমা নদীর উত্তরপাড়ের তিনটি ইউনিয়ন সুরমা, জাহাঙ্গীরনগর ও রঙ্গারচর এবং দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর, বাংলাবাজার ইউনিয়নসহ শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ জেলা শহরের সাথে সরাসরি যোগাযোগের প্রধান প্রতিবন্ধকতা সুরমা নদী। হালুয়ারঘাট-ধারারগাঁও এলাকায় একটি সেতুর অভাবে বৃহৎ জনগোষ্ঠী এখনো সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কৃষি, পর্যটনে অপার সম্ভাবনাময় সুরমার উত্তরের এই জনপদটির সেতুর অভাবে অর্থনৈতিক সূচকে পিছিয়ে রয়েছে। এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সুরমা নদীতে একটি সেতু বাস্তবায়নের দাবি উঠে আসলেও তা উপেক্ষিত রয়েছে।
সাধারণ ভোটাররা বলছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে হালুয়ারঘাট-ধারারগাঁও সেতুটি হবে প্রার্থীদের জয়ের বন্দরে পৌঁছার অন্যতম ট্রামকার্ড। সেতু বাস্তবায়নে যেই প্রার্থী ভূমিকা রাখতে পারবে তাকেই সুরমার উত্তরপাড়ের জনগণ ভোট দিবে।
সুরমা নদীর উত্তরপাড়ের বাসিন্দা মামুন মিয়া বলেন, নির্বাচন আসলেই প্রার্থীরা বলেন সেতু করে দিবেন। কিন্তু কোনো সময়ই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন পাইনা। উত্তরপাড়ের মানুষের কাছ থেকে এবার ভোট নিতে হলে অবশ্যই এবার সেতু বাস্তবায়নের সত্যিকারের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। কেননা এই এলাকার লাখো মানুষের একটাই দাবি হালুয়ারঘাট-ধারারগাঁও সেতু।
জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা শামসুল আলম বলেন, একটিমাত্র সেতুর কারণে আমরা সড়কপথে সরাসরি শহরে যেতে পারি না। আমাদের উৎপাদিত ফসল, সবজি শহরে নিয়ে যেতে অনেক টাকা খরচ করতে হয়। যে প্রার্থী সেতু করে দিতে পারবে তাকেই আমরা ভোট দিবো।
জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন মনির বলেন, বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ হালুয়ারঘাট-ধারারগাঁও সেতু নিয়ে অনেকবার সংসদে কথা বলেছেন। ইতোমধ্যে সেতু প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। পীর মিসবাহ আবারও সংসদে গেলে এই সেতুর কাজ দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে।
সুরমা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন বলেন, টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। কিন্তু দলের প্রার্থী না থাকায় আমাদের এলাকার সেতু বাস্তবায়ন উপেক্ষিত থাকছে। এলাকার মানুষ উন্নয়নের স্বার্থে পরিবর্তন চায়। সেতু চায়। আওয়ামী লীগ প্রার্থী সংসদ সদস্য হলে হালুয়ারঘাট সেতুসহ এলাকার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে বলে মনে করছি।