গতকাল মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি শিরোনাম ছিল, ‘কঠোর অবস্থানে প্রশাসন, পেঁয়াজ অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলেই ব্যবস্থা’ আবার একটি শিরোনাম ছিল, ‘১০ ভরি স্বর্ণের দাম ৪০ হাজার দেখালেন এমপি জয়া সেন’। এই দুই শিরোনামে সামগ্রিক বিবেচনায় আকাশ-পাতাল তফাৎ যেমন আছে তেমনি আবার কোনও তফাতই নেই। তফাৎই নেই এই জন্যে যে, দুটিতেই অর্থনীতির জটিল বিষয় জড়িয়ে আছে আবার তফাৎ আছে এই জন্যে যে, দুটির মধ্যে একটি মুক্তবাজার অর্থনীতির দেদার মুনাফা লুণ্ঠনের নির্মম অমানবিক আচরণের প্রকাশ ও অন্যটি বাজারি বাস্তবতাকে অস্বীকার করে মিথ্যাচারের জটিল রাজনীতিকে প্রতিপন্ন করে নিজের আয় যথাসম্ভব কম দেখানোর সুবাদে জনগণের সমর্থন আদায়ের যথাসম্ভব কারিকুরি প্রদর্শন। আরও একটি তফাৎ এই যে, পেঁয়াজের দাম অতিরিক্ত বাড়ালে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি প্রদর্শিত হয়েছে এবং অন্তত কমপক্ষে ৪০ লাখের স্থলে ৪০ হাজার দাম দেখালে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বা কী প্রতিকার করা হবে তার কোনও উল্লেখ নেই।
এমতাবস্থায় অভিজ্ঞ মহলের অভিমত এই যে, প্রশাসনের উচিত এবংবিধ অনিয়মের ক্ষেত্রে ন্যায়সঙ্গত ও যথার্থ প্রতিকার করা। যদি এই উভয়ক্ষেত্রে প্রতিকার না করা হয় বা না করা যায়,তাহলে একদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণ কীছুতেই সম্ভব হবে না এবং অন্যদিকে রাজনীতিকে নৈতিকতার ন্যায়সঙ্গত পথে পরিচালিত করা যাবে না। এর ফলে সমাজে সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে এবং সাধারণ মানুষের উপর রাজনীতিক ও আর্থনীতিক নিপীড়ন রোধ করা যাবে না, সামাজিক দুর্ভোগ-দুর্গতি বাড়বে। অর্থাৎ সমাজটা বর্তমানের জটিল ও অস্থির সমাজের চেয়ে আরও বেশি করে জটিল ও অস্থির হয়ে উঠে পুরোপুরি একটা মাৎন্যায়নির্ভর সমাজে পর্যবসিত হবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বিদগ্ধমহলের তাই প্রশ্ন, সমাজটা আসলে কোথায় যেতে বসেছে?