1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ‘স্নায়ুযুদ্ধে’ দুই পরাশক্তি

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৩

বিশেষ প্রতিবেদক ::
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের মধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ভারত, চীন এবং রাশিয়া নির্বাচনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মনে করে। যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলে নানাবিধ চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছে। সেই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতিসহ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মতো করে কেউ হস্তক্ষেপ করছে না। বেশিরভাগ বন্ধুদেশ অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনা করে সংকট সমাধানের তাগিদ দিয়েছেন। এই বিভাজন ¯œায়ুযুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় বলেও মন্তব্য তাদের।
¯œায়ুযুদ্ধ হলো রাজনৈতিক ও সামরিক টানাপোড়েনের বিরোধী ভূ-রাজনৈতিক ক্ষমতার ব্লকের মধ্যে ঠা-াযুদ্ধ-পরবর্তী যুগের বর্ণনা দিতে ব্যবহৃত শব্দ, যার একটি ব্লক সাধারণত রাশিয়া বা চীন এবং অন্যটি নেতৃত্বাধীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর। একে দ্বিতীয় ঠা-া যুদ্ধ বা নতুন ¯œায়ুযুদ্ধও বলা হয়। ¯œায়ুযুদ্ধ এমন একটি কৌশল যেখানে বিবাদমান পক্ষ ̧গুলো ভয়াবহ ¯œায়বিক উত্তেজনার মধ্যে থাকবে একে অন্যের উপর চাপ বৃদ্ধি করতে থাকবে কিন্তু সরাসরি যুদ্ধের ঝুঁকি নেবে না। এক্ষেত্রে কোন দেশ সরাসরি যুদ্ধের ঝুঁকি না নিলেও এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করে রাখবে যা যুদ্ধ পরবর্তী কিংবা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্ম দেবে। সরাসরি যুদ্ধের ঝুঁকি না থাকলেও এক্ষেত্রে এমন একটি যুদ্ধের আবহ তৈরি হবে যা এক অর্থে যুদ্ধ নয়, শান্তিও নয়।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বারবার সেই ¯œায়ুযুদ্ধ পরিস্থিতির কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
বিদেশিদের সহযোগিতা ছাড়াই বাংলাদেশ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। একই সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো প্রভাব খাটাচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা সম্প্রতি সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন। এবং ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ইংরেজিতে লিখিত আকারে জাখারোভার বক্তব্য প্রকাশ করা হয়।
এদিকে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো দলকে সমর্থন করে না, তারা বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। কী বলেছিলেন মারিয়া? রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, বিদেশি শুভাকাঙ্খীদের কোনো সহযোগিতা ছাড়াই বাংলাদেশ নিজেদের আইন মোতাবেক স্বাধীনভাবে ৭ জানুয়ারি ২০২৪ নির্বাচন করতে সক্ষম, এ নিয়ে আমাদের দিক থেকে কোনো সন্দেহ নেই।
স্বচ্ছতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র।
এদিকে এই মাসের শুরুর দিকে বন্ধুত্বপূর্ণ সফরে বাংলাদেশে আসে রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের তিনটি জাহাজ। ৫০ বছর পরে ঠিক এই সময়ে বন্ধু রাশিয়ার এই উদ্যোগ নিয়েও মার্কিন ব্লকের বিশ্লেষকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা গেছে। বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে ভেড়া রুশ নৌবহরের ওই জাহাজগুলোর মধ্যে রয়েছে সাবমেরিন বিধ্বংসী দুটি যুদ্ধজাহাজ। সেগুলোর নাম ‘অ্যাডমিরাল ত্রিবুতস’ ও ‘অ্যাডমিরাল প্যানতেলেইয়েভ’। অপর জাহাজটি জ্বালানিবাহী ট্যাংকার। সেটির নাম ‘পেচেনগা’।
আবার যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বাইরে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের স¤পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি, কোয়াড নিরাপত্তা সংলাপ এবং ভারত ও চীনের মধ্যে চলমান উত্তেজনাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভূ-রাজনৈতিক পুনর্গঠনের পটভূমিতেই চীনের অনেকটা কাছে চলে এসেছে বাংলাদেশ।
মেজর জেনারেল (অব) আবদুর রশীদ মনে করেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো এতোটা ভেঙে পড়েনি যে বৈদেশিক হস্তক্ষেপ লাগবে। তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন সকলের প্রত্যাশা। সেটার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নেতৃত্বে চলা পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো সব দলকে সমান সুযোগ দেওয়ার কথা বলে অথিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে এবং ভয়ভীতি দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু করার প্রক্রিয়া অবলম্বন করছে, সেই প্রক্রিয়াটি পক্ষপাতদুষ্ট। সেকারণেই পরাশক্তির মধ্যে বিভক্তি সুস্পষ্ট হয়েছে। একপক্ষ মনে করছে এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়, জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে। আরেকপক্ষ চাপ প্রয়োগ করে দাবি নিশ্চিত করতে চাইছে।
যারা কিনা বাইরের দেশের শক্তি বাংলাদেশের জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে দেখতে চায়, চাপ প্রয়োগকারী হিসেবে দেখতে চায় না। পুরো পরিস্থিতিতে এই চাওয়া না-চাওয়া বেশ ¯œায়ুযুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com