আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে লক্ষ্য করে সরকারি ও অন্যান্য দলের মনোনয়নপত্র বিক্রির হিড়িক চলছে, আর অন্যদিকে চলমান হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, বিস্ফোরণসঞ্জাত নৈরাজিক অবস্থা তৈরি হয়েছে দেশজুড়ে। সুনামগঞ্জও এর ব্যতিক্রম নয়, এখানেও পুলিশের সঙ্গে বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এবং অগ্নিসন্ত্রাসও বাদ যায়নি।
মোদ্দাকথা দেশে সাধারণভাবে একধরণের নৈরাজ্যিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায় যে, সহিংস ঘটনাসহ চলমান হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, বিস্ফোরণ, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে হামলা এবং বিএনপি এমন ধরণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কাছে। জনসাধারণের প্রশ্ন, কিন্তু কেন? রাজনীতির এবংবিধ অধঃপতন কেন?
বাংলাদেশের অমিত শক্তিধর বিরোধী দলকে বিদেশিদের কাছে অভিযোগ করতে হবে কেন? উক্ত অরাজক কর্মকা-ের প্রতিকারার্থে বিএনপি দেশের ভেতরে কোনও স্বাধীন ও নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান খোঁজে পাচ্ছে না কেন? আমাদের দেশের রাজনীতিকরা এমন অরাজকতার প্রতিকার করতে পারে তেমন শক্তিধর প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলতে পারলেন না কেন? এর জন্য বিএনপির কি কোন দায় নেই?
বিএনপিও তো দেশ শাসন করেছে দীর্ঘ সময়ব্যাপী। সুতরাং ঘটমান অরাজকতার ঘটনায় স্বভাবতই সাধারণের মনে প্রশ্ন জেগেছে যে, বিদেশিরা কি আমাদের দেশের অভিভাবক, না কি কর্তা? বিএনপি কি তাই মনে করে? দেশের ভেতরে আন্দোলনের নামে অরাজক কা- ঘটছে। দেশের সব মানুষই তা জানেন এবং প্রত্যক্ষ করছেন।
প্রতিকারের জন্য দেশের ভেতরে কোনও প্রতিষ্ঠান যদি না থাকে জনগণের কাছে বিচার চাওয়া যেতে পারে, বিদেশিদের কাছে বিচার চাইতে যাওয়া কেন? এর অর্থ কি এই নয় যে, বিএনপি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বিদেশিদের কাছে বিকিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে? এই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির কাছে দেশের সকল মানুষের প্রশ্ন একটাই, বিএনপি কি বিদেশিদের কাছে চিঠি দিয়ে প্রকারান্তরে বিদেশিদের কাছে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে সমর্পণ করে দিচ্ছে না? সে অধিকার কি দেশের মানুষ বিএনপিকে দিয়েছেন? যদি না দিয়ে থাকেন তবে কেন বিএনপি এমন গর্হিত কাজে নাক গলাচ্ছে? তাদের রাজনীতিক উদ্দেশ্য কি বিদেশিদের গোলামি করা? বিদগ্ধ মহলের অভিমত এই যে, বিএনপিকে বিদেশিদের কাছে আত্মসমর্পণের নীতি পরিত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের মানুষের কাছে ফিরে আসাই হবে অধিকতর মঙ্গলজনক ও যৌক্তিক। দেশের ভেতরে বিদেশিদের ধামাধরা রাজনীতির চর্চা করার কোনও যৌক্তকতা আছে বলে দেশের মানুষ মনে করেন না।