টাঙ্গুয়ার হাওরের করচবন নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। শিরোনাম দেওয়া হয়েছে, ‘ঝুঁকিতে শত শত করচ’ এবং নিচে লেখা হয়েছে, ‘দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট, প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ-টাওয়ার সংলগ্ন করচ গাছের গোড়া থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। এতে শত শত গাছ উপড়ে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, বর্ষা হলেই টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকার প্রতিটি কান্দা পানির নিচে চলে যায়। দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকায় ওই কান্দাগুলোর মাটি একেবারেই নরম হয়ে যায়। আর ওই সময়েই টাঙ্গুয়ার হাওর ওয়াচ-টাওয়ার এলাকায় পর্যটকদের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন শত শত পর্যটক ওই করচ গাছের বাগানে পানিতে নেমে হৈ-হুল্লোড় করে থাকেন। পর্যটকদের পায়ের চাপে করচ গাছের গোড়াসহ আশপাশের মাটি গলে পানিতে মিশে যায়। এতে করচ বাগানের শতশত গাছ এখন উপড়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। পর্যটকদের বেপরোয়া বিচরণে শুধু করচ গাছ নয়, হুমকির মুখে রয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওরের ২০০ জাতের গাছ-গাছালি।’ এবংবিধ সংবাদ আবারও প্রমাণ করে যে, টাঙ্গুয়ার হাওর বিপন্ন হয়ে পড়েছে এবং এই হাওরটি বিগত দশক তিনেক থেকে প্রতিবেশ-বিপন্নতার শিকার হয়ে আসছে ক্রমাগত বর্ধিত হারে ও প্রতিকারহীনভাবে। টাঙ্গুয়া যখন তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বলতে গেলে পুরোটাই হারিয়ে ফেলে জলের মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে তখন বিগত যৌবনা এক হাওরের যৌবন উপভোগ করার জন্য পর্যটকদের ভিড় জমতে শুরু করেছে এবং সেখানের জীববৈচিত্র্য গুদের উপর বিষফোঁড়ার মতো আরও হুমকির মুখে পড়তে শুরু করেছে। বিদগ্ধ মহলের ধারণা, টাঙ্গুয়া এখন জলের তলের মাটিতে মদের বোতলের এক বিরাট ভাগাড় এবং জলের মরুভূমির সমতলে বিলাসীতার আড়ালে নৌকার জঙ্গলে নারীপুরষের নিভৃত চারণভূমি। দেশে রামসার দ্বিতীয় সাইটের এই পরিণতির জন্য দায়ি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনের গাফিলতি। আমাদের বক্তব্য এই পর্যন্তই, এর বেশি কীছু বলতে চাই না। কেবল বলি বাস্তবতা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। জলের মরুভূমি থেকে জলের হাওরে এবং বিপন্নতা থেকে স¤পন্নতায় ফিরিয়ে আনতে হবে। নিয়ন্ত্রণহীন পযর্টনব্যবস্থা এবং জীববৈচিত্র্য বিনাশী বহুমুখি কার্যক্রম বহাল রেখে সেটা হবে না।