আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে কথাবার্তা চলছে। অনেকে অনেক কথা বলছেন। সবই অনুমান। স্বকীয় অনুমানের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের কমতি হচ্ছে না। যে-কোন আড্ডা-চাড্ডায় এখন স্পষ্ট দুইটি অভিমত আলোচনায় উঠে আসছে। একটি ‘নির্বাচন হবে’ অন্যটি ‘নির্বাচন হবে না’। যারা ‘নির্বাচন হবে না’র পক্ষে তাঁরা মার্কিনি ষড়যন্ত্রের শেষ চালের কথা বলছেন। অর্থাৎ ‘ওস্তাদের মার শেষ রাইতে’ প্রবাদের অবতারণা করছেন। তাঁদের অনুমানের দ্যোতনায় রয়ে গেছেÑ অশুভ একটা কীছু হবেই। বাংলাদেশকে সা¤্রাজ্যবাদের আধিপত্যবাদিতার কাছে নত হতেই হবে এবং প্রকারান্তরে একটি অস্থির অবস্থা তৈরি হবে দেশে, যে-অস্থিতিশীলতার লেজ ধরে যুদ্ধাবস্থার আবির্ভাব হতে পারে। আশঙ্কাটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এমন হতেই পারে।
পৃথিবীতে এখন মন্দা চলছে। পুঁজিবাদকে এই মন্দার হাত থেকে নিজের উদ্ধার পেতে হলে অবশ্যই একটা বিশ্বযুদ্ধ লাগাতে হবে। অর্থাৎ পুঁজিবাদ এখন নিজেকে বাঁচাতে পৃথিবীতে তৃতীয় বিশ^যুদ্ধের অপেক্ষায় আছেÑ পুঁজিবাদ কোটি কোটি মেহনতি মানুষের রক্ত চায়।
বর্তমান দৈশিক-বৈশি^ক অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কর্তব্য কী? এই প্রশ্নটা দেশের সকল মানুষের কাছে একটি জরুরি প্রশ্ন। দেশ কি বিশ^যুদ্ধের সূচনাক্ষেত্র হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করবে? না আসন্ন যুদ্ধকে এড়িয়ে গিয়ে সকল রাজনীতিক দল মিলেমিশে নির্বাচন সম্পন্ন করে সমূহ বিপদ থেকে এই দেশকে আপাতত রক্ষা করবে?
বিএনপির কি ভীমরতি ধরেছে? বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ লোকে দেশের বিপন্ন ভবিষ্যৎ দেখতে পারছেন, তাঁদের অনুমানে বিপদের আঁচ তাঁরা পাচ্ছেন, কিন্তু বিএনপি পাচ্ছে না। তাঁরা মার্কিনিদের তালে তাল মিলিয়ে নৃত্যপর। এর নিহিতার্থ কি এই নয় যে, তাঁরা একটা যুদ্ধাবস্থার ভেতর দিয়ে দেশকে নিয়ে যেতে চান? এই প্রশ্নের কোন উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। কারণ কানার মনে মনে জানার মতো করে সকলেই এই প্রশ্নের উত্তর জানা আছে।