শহীদনূর আহমেদ ::
জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭ মাস বয়সী শিশু সন্তান আনহারকে নিয়ে ২৫০ শয্যা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালিক। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় ওয়ার্ডে শয্যা মিলেনি। তাই শিশু ওয়ার্ডের সম্মুখদ্বারে মেঝেতে গত ৬ দিন ধরে শিশু সন্তানের চিকিৎসা সেবা চলছে। হাসপাতালে মেঝেতে থেকেও চিকিৎসা নিলেও সন্তান সুস্থ হয়ে উঠায় স্বস্তিতে শিশুটির মা ও বাবা।
১ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে নিয়ে দুদিন ধরে শিশু ওয়ার্ডের বারান্দার মেঝেতে রয়েছেন জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা এলাকার শাহীনূর দম্পত্তি। তাদের সন্তান নিমোউনিয়া আক্রান্ত। সন্তান শঙ্কামুক্ত না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে থাকতে হবে আরও কিছুদিন। কোনোভাবে ওয়ার্ডের ভেতরে একটি বিছানার ব্যবস্থা হলে হয়তো কিছুটা সুবিধা হতো। কিন্তু হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকায় এটি সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান শাহীনুর।
গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সরেজমিনে সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। এদের বেশিরভাগই ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক দিনের আবহাওয়া পরিবর্তনে শীতের প্রারম্ভে ঠা-াজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ঠা-াজনিত সমস্যা নিয়ে রোগীরা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভিড় করছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ঠা-াজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এর মধ্যে শিশুরোগীর সংখ্যাই বেশি। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগী বেশি থাকায় মানসম্মত সেবা প্রদানে হিমসিমে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। শীতের প্রকোপ আরও বাড়লে রোগীর সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৫৮-৬০টি শয্যার ব্যবস্থা থাকলেও বিগত কয়েকদিন ধরে গড়ে ১৫০-১৬০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী ভালো হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও নতুন রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছেন। এতে ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়ে যাচ্ছে।
এদিকে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, ভর্তি রোগীদের মধ্যে এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। এছাড়াও অনেক প্রাপ্তবয়স্ক রোগী হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যাদের বেশিরভাগই ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে আসেন।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনে ঠা-াজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে শিশুরা আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। নিউমোনিয়া, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগী বেশি আসছে সদর হাসপাতালে। আমরা চেষ্টা করছি সামর্থ্যরে মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করার। ঠা-াজনিত রোগ থেকে বাঁচতে সচেতনতা প্রয়োজন।