শহীদনূর আহমেদ ::
গেল অর্থ বছর তুলনামূলক বাঁধের কাজ ভালো হওয়ায় ও বর্ষায় বাঁধের ক্ষয়ক্ষতি কম হওয়ায় এবার ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প সংখ্যা এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সংখ্যা কমবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। তবে সেটি নির্ভর করবে বাঁধের সার্ভে টিমের জরিপের উপর। যেসব এলাকায় বাঁধ ও ক্লোজার অধিক ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ সেসব এলাকা বিবেচনা করা স্কীম প্রণয়ন করা হবে। চলতি মৌসুমে বাঁধের কাজে গতিশীলতা বাড়াতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮ উপজেলার শাখা কর্মকর্তাকে পরিবর্তন করা হয়েছে। তাছাড়া জেলাব্যাপী বাঁধের কাজ বাস্তবায়নে বিভিন্ন জেলা থেকে পাউবোর অর্ধশত কর্মকর্তা ও কর্মচারী অতিরিক্ত যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ বাস্তবায়নে জেলার বিভিন্ন হাওরে বাঁধের সার্ভে কাজ চলমান রয়েছে। ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত পর্যন্ত ৩০০ কিলোমিটার বাঁধের জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সার্ভে কাজ ও বাঁধ বাস্তবায়ন কাজ সম্পন্ন করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ২১ জন সার্ভেয়ার, ১২ জন কার্যসহকারী ও ১৩ জন এসও অতিরিক্ত যুক্ত করা হয়েছে। জেলার শাল্লা, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলার শাখা কর্মকর্তা পরিবর্তন করে এসব উপজেলায় নতুনভাবে স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ছাতক উপজেলার শাখা কর্মকর্তার স্থলাভিষিক্ত না হলেও কয়েকদিনের মধ্যে এই উপজেলায় শূন্যস্থান পূরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গেল বছরের মতো চলতি মৌসুমেও বাঁধের কাজ সময় মতো সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে সভা করেছে জেলা কাবিটা মনিটরিং ও বাস্তবায়ন কমিটি। বাঁধের কাজ বাস্তবায়নে এবার কোনো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করা হবে না বলে সভায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।
এদিকে পাউবো’র কর্মকর্তা পরিবর্তনের বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে হাওর ও কৃষকের সংগঠন হাওর বাঁচাও আন্দোলন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, প্রতিবছর বাঁধের কাজে বিভিন্ন অনিয়ম হয়ে থাকে। এক উপজেলায় অনেকদিন কর্মরত থাকায় স্থানীয়দের সাথে এসওদের সখ্যতা গড়ে উঠে। তাছাড়া প্রকল্প বৃদ্ধি ও পিআইসি গঠনে এসওদের বিতর্কিত ভূমিকা থাকে। তাই রদবদল হলে কাজের স্বচ্ছতা বাড়ে। আমাদের সংগঠনের অন্যতম একটি দাবি ছিল এটি। আশা করছি এবার বাঁধের কাজ আরও আন্তরিক হবে কর্তৃপক্ষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. শামসুদ্দোহা বলেন, গেল বছর বাঁধের কাজ ভালো হয়েছিল। এবার বাঁধের ক্ষয়ক্ষতির দিক বিবেচনা করে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। গেল বছরের চেয়ে প্রকল্প কমতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করবে সার্ভে কমিটির উপর।