1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হুমকির মুখে যাদুকাটা নদীর অস্তিত্ব

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার ::
বালুমহাল ইজারার সময় বলা হয়েছে, সনাতন পদ্ধতিতে হাত, বালতি, বেলচা দিয়ে বালু তুলতে হবে। কিন্তু ইজারাদারের লোকজন এই পদ্ধতি এড়িয়ে দ্রুত বেশি বালু তুলতে ব্যবহার করছেন ড্রেজার। এ ছাড়া ‘যাদুকাটা-১’ ও ‘যাদুকাটা-২’ বালুমহাল হিসেবে ৫০০ একর জায়গা জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নেওয়া হলেও বালু তোলা হচ্ছে কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। আর তাতে তাহিরপুর উপজেলায় ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে যাদুকাটা নদীতীরবর্তী অন্তত ২৫ গ্রাম।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ বছর যাদুকাটা-১ বালুমহাল ২৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় রতন মিয়ার মালিকানাধীন সোহাগ এন্টারপ্রাইজ এবং যাদুকাটা-২ বালুমহাল ৪২ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকায় খন্দকার মঞ্জুরের প্রতিষ্ঠান আরাফ ট্রেড করপোরেশন লিমিটেডকে ইজারা দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ইজারা নেওয়ার পর থেকেই সোহাগ এন্টারপ্রাইজ ও আরাফ ট্রেড করপোরেশনের মালিকেরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নদীর মাঝ বরাবর বালু না তুলে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পাড় কেটে বালু তুলছেন। এতে সেখানকার জীববৈচিত্র্য এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ও গতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, এই যাদুকাটার নিয়ন্ত্রণ অনেক ওপর মহল থেকে হয় শুনেছি। তবে এই যাদুকাটায় অনেক চোখ (পাহারাদার) আছে; তাদের নিয়ন্ত্রণেই বালু তোলার কাজ ড্রেজার দিয়ে চলে। যখন পুলিশ বা প্রশাসন অভিযানে আসে, তখনই ওই চোখেরা আমাদের সতর্ক করে দেয়। পরে আমরা ড্রেজার মেশিনগুলো নদীতে ডুবিয়ে দিই।
লাউড়েরগড় এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার মিয়া বলেন, যাদুকাটা আর আগের মতো নেই। সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যাঁরা ইজারা নিয়েছেন, তাঁরা ওই পুরোটা নদী শাসন করেই চলেছেন। ইচ্ছেমতো বালুর জন্য পাড় কেটে যাচ্ছেন, যা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর। প্রশাসনের নজরদারি বেশি না থাকায় ইজারাদারেরা ইচ্ছেমতো পাড় কেটে বালু তোলেন।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, এখন যেভাবে যাদুকাটা নদীর পাড় কাটা হচ্ছে, তা আর কখনো হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে এই এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। নদীর পাড় কাটার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের আদেশে এই নদী ইজারা দেওয়া বন্ধ ছিল। পরবর্তী সময়ে নদীর পাড় না কাটা ও ড্রেজার ব্যবহার না করার শর্তে ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু এখন দিনরাত নদীর পাড় কাটা হচ্ছে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, যাদুকাটার পরিবেশ বাঁচাতে আমি অনেক প্রতিবাদ করেছি, জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে প্রশাসনের সব জায়গায় একে রক্ষার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। এখন যাদুকাটার অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। লাউড়েরগড়, ঘাগটিয়া, বড়টেক, আদর্শগ্রাম, গড়কাটি, ঘাগড়া, রাজারগাঁও, সোহালা, পাঠানপাড়া, কুনাটছড়া, মোদেরগাঁও, মাহারাম, মানিগাঁও, বিন্নাকুলি, মিয়ারচর, পিরিজিপুর, দক্ষিণকূল, আনোয়ারপুর, নোয়াহাট, পাতারী, বালিজুরী, মাহমুদপুরসহ ২৫টির মতো আশপাশের এলাকা ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
যাদুকাটা-২ ইজারা নেওয়া আরাফ ট্রেড করপোরেশন লিমিটেডের মালিক খন্দকার মঞ্জুর বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে না। পাড় কেটে বালু তোলার অভিযোগটিও মিথ্যা। আমরা বেলচা, বালতি দিয়েই বালু উত্তোলন করি। কারা পাড় কাটে, সেটিও আমি জানি না।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, যাদুকাটার পাড় কাটার বিষয়টি অবগত আছি। সম্প্রতি অভিযান চালানোর পর অবৈধ ড্রেজার ব্যবহার বন্ধ আছে। আমরা আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছি এবং এটি চলমান থাকবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com