সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রেওয়াজ অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার আগে গতকাল বৃহ¯পতিবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি স¤পর্কে অবহিত করেছে কমিশন। এদিকে সরকার পতনের দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহল থেকে চলমান সহিংসতা পরিহার করে রাজনৈতিক সমঝোতা-সংলাপের আহ্বান জানানো হলেও তাতে কাজ হয়নি। ফলে চলমান হরতাল-অবরোধের মধ্যেই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা জানিয়ে আগামী সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। এ ক্ষেত্রে বিএনপি বর্জন করলেও নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী দলগুলোকে নিয়ে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যাসন্ন। সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। রেওয়াজ অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে থাকে। বৃহ¯পতিবার এই সাক্ষাত সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন প্রস্তুতি সংক্রান্ত সব ধরনের অগ্রগতি অবহিত করেছে কমিশন।
এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মতো পরিবেশ স¤পূর্ণরূপে রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর ইসি। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বারবার বলেছেন।
জাহাংগীর আলম জানান, নভেম্বর মাসের প্রথমার্ধের যে কোনো দিন তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। সে হিসাবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী সপ্তাহের কোনো সময়ে তফসিল হতে পারে, জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, এ বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। নির্বাচন কমিশনের যেসব প্রস্তুতিমূলক কাজ রয়েছে, তার সব এগিয়ে রয়েছে। নির্বাচনী মালামালও ধাপে ধাপে জেলাগুলোয় পাঠানো হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে ইসি সচিব জানান, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যথাসময়ে পরিপত্র জারি করে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মাঠে থাকবেন। ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারেন, সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পরিপত্র জারি করবে এবং সেভাবে মন্ত্রণালয় কাজ করবে।
ইসি সূত্র জানায়, সিইসির সঙ্গে গত মঙ্গলবার আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা। সকালে সিইসির দপ্তরে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল হামিদুল হক এবং পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম সিইসির সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন। এরপর বিকালে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল টিএম জোবায়ের।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি স¤পন্ন হয়েছে। অধিকাংশ নির্বাচনী সরঞ্জাম মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। ভোটগ্রহণের জন্য আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ প্রক্রিয়াও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। এছাড়া শুক্রবার ও শনিবার ৩২ জেলার প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি রয়েছে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। এখন একটি কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ভোটের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হবে। সে ক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার জন্য সম্ভাব্য তারিখ ১৩ থেকে ১৫ নভেম্বর। এ ক্ষেত্রে ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র।