শহীদনূর আহমেদ ::
আগাম বন্যা ও পাহাড়ি ঢলের কবল থেকে বোরো ফসলের সুরক্ষায় সরকার প্রতিবছর বিপুল অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকে হাওরের রাজধানী সুনামগঞ্জ জেলায়। কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কার্যক্রমে প্রকল্প প্রণয়ন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি, নির্মাণকাজের ধরণ ও গতি নিয়ে প্রতিবছরই নানা প্রশ্নের জন্ম হয়। এছাড়া নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু এবং শেষ করতে পারে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। নীতিমালা অনুযায়ী নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে বাঁধের সার্ভে ও স্কিম প্রণয়ন করে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করার কথা থাকলেও প্রতিবারই এটি পালনে ব্যর্থ হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। নভেম্বর মাসের এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনো বেশির ভাগ উপজেলায় ফসলরক্ষা বাঁধের সার্ভের কাজ শুরু হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গেল মাসে জেলায় টানা বৃষ্টিপাতের ফলে হাওর থেকে সময় মতো পানি সরে যাচ্ছে না। তাই বাঁধ সার্ভের কাজ শুরু করা যায়নি। পানি কমার সাথে সাথে সার্ভের কাজ শুরু হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৭১৮ কিলোমিটার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ রয়েছে। তার মধ্যে এবার প্রায় হাজার কিলোমিটার বাঁধ সার্ভে করার টার্গেট নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে তিন থেকে চার উপজেলায় সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে। বাকি উপজেলাতে কয়েকদিনের মধ্যে সার্ভের কাজ শুরু হবে।
বাঁধ সার্ভের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ চিহ্নিতকরণ, বাঁধের আকার আকৃতি ও উচ্চতা মাপা হয়ে থাকে। যার উপর ভিত্তি করে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধে প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়। বাঁধের সার্ভে কাজ বিলম্বে শুরু হওয়ায় প্রকল্প প্রণয়ন ও কাজ শুরু নিয়ে শঙ্কা তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন হাওরের কৃষক ও সচেতন নাগরিকরা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সার্ভে কাজ শেষ করে প্রকল্প প্রণয়ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, প্রতি বছর সময় মতো বাঁধের কাজ শুরু ও শেষ করতে পারেননা সংশ্লিষ্টরা। এতে ফসলের সুরক্ষা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। আমরা চাইবো এবছর অন্তত সময়মতো সব হবে। যাতে ফসলের সুরক্ষা নিয়ে কৃষকদের চিন্তায় না থাকতে হয়।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. শামসুদ্দোহা বলেন, হাওর থেকে পানি দেরিতে নামছে। তাই সার্ভের কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। তিন-চার দিন হলো কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি হাওরে পানি নামার সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধের সার্ভে শেষ করা হবে।