1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

আগুন সন্ত্রাসে দগ্ধ বাসচালক সবুজ মিয়ার প্রশ্ন : যারা আগুন দিলো হ্যারা কি মানুষ?

  • আপডেট সময় বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩

বিশেষ প্রতিবেদক ::
রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন সবুজ মিয়া।তার দুই হাত-পা ব্যান্ডেজ করা। মুখও পুড়ে গেছে। শরীরে আগুনে পোড়ার ক্ষত আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে শুধু চোখের পানি ঝরানো ছাড়া আর কিছুই করার নেই সবুজ মিয়ার। কিন্তু দু’বেলা ভাতের জোগার করতে গিয়ে এই পরিণতি কেন? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাননি তিনি।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা অবরোধের মধ্যে গত রবিবার সকালে রাজধানীর মেরাদিয়ায় বাসে দেওয়া আগুনে দগ্ধ হন সবুজ মিয়া। তিনি জানান, রবিবার সকালে বাসা থেকে বাসে করে রওনা হন তার বাস বের করার জন্য। বাসটিতে তখন ১৫-২০ জন যাত্রী ছিল। বাঁশপট্টি এলাকায় পৌঁছলে ৩০-৩২ বছর বয়সী কালো গড়নের এক যুবক হঠাৎ করে একটি পেট্রোলবোমা ছুড়ে মারে। মুহূর্তের মধ্যে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। তখন চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে খাদে পড়ে যায় বাসটি। অন্য যাত্রীরা দ্রুত নামলেও তার শরীর ও মুখে আগুন লাগে। আশপাশের লোকজন দ্রুত আগুন নিভিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে সবুজ মিয়া বলেন, এই জ্বালা সহ্য হয় না ভাই, কিন্তু কী করমু, কারে কমু। এখন শুধু শরীর আছে, কিন্তু কিছু করার ক্ষমতা নাই। কার কাছে বিচার চামু? কেডা বিচার করব? যারা আগুন দিলো হ্যারা কি মানুষ? মানুষ হইয়া কীভাবে মানুষের গায়ে আগুন দেয়?
সবুজ মিয়া ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছোট। বৃদ্ধ বাবা ময়মনসিংহে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। ১২-১৩ বছর আগে প্রথমে চালকের সহকারী (হেলপার) হিসেবে দুই বছর এবং পরে প্রশিক্ষণ নিয়ে গাড়ি চালানো শুরু। গাড়ি চালিয়ে পাওয়া টাকা দিয়েই সংসার চলে তার। পুরো পরিবার সবুজের আয়ের ওপর নির্ভরশীল।
সবুজের সেবা শুশ্রƒষা করছেন তার স্ত্রী রোশেদা বেগম। তিনি জানান, অবরোধে কয়েক দিন গাড়ি চালাতে চাননি তার স্বামী। হাতে তেমন একটা টাকা ছিল না। কোনোরকমে বাজার করে সংসার চলছিল। কিন্তু কিস্তির টাকা দিতে না পারলে আরেক সমস্যা এটা চিন্তা করে গত রবিবার সবুজ বের হন গাড়ি চালানোর জন্য। কিন্তু টাকা রোজগার করতে গিয়ে তার স্বামী এখন মৃত্যু শয্যায়।
রোশেদা আরও জানান, সবুজের তেমন কোনো স্বজন নেই ঢাকায়, তাই হাসপাতালে তাকেই সবকিছু দেখাশোনা করতে হচ্ছে। ছোট বাচ্চা দুটো তার মায়ের কাছে রেখে এসেছেন। তারা কান্নাকাটি করে, সবুজকে দেখতে চায়। এদিকে তার আরেক চিন্তা, স্বামীকে হাসপাতালে সময় দিতে গিয়ে যে বাসায় কাজ করেন সেখানে তার কাজ থাকবে কি না তা নিয়ে। এখন তাদের সহায়তার প্রয়োজন। সরকার যদি সহায়তা করত তাহলে কিছুটা কষ্ট লাঘব হতো।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম জানান, দগ্ধ সবুজকে এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল। যেহেতু তার শ্বাসনালিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেজন্য চিকিৎসকরা এখনো শঙ্কামুক্ত বলছেন না। তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com