স্টাফ রিপোর্টার ::
শাল্লায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ে চারটি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শাল্লা সদরস্থ ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামে প্রভাষক মহিতোষ দাশের বাড়ি থেকে এ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রভাষক মহিতোষ দাশের ভাড়াটিয়া বিকাশ সূত্রধরের ঘর থেকে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ওই ঘরের সংলগ্ন কুমুদ রঞ্জন মজুমদারের একটি ঘরে। এভাবেই বাড়তে থাকে আগুনের লেলিহান শিখা। পরে পাশে থাকা আরও দুটি ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ৪টি পরিবারের স্বর্ণ, আসবাবপত্র, নগদ টাকাসহ প্রায় কোটি টাকার স¤পদ। ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাত্র ২শ’ মিটার দূরে। কিন্তু উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি কিংবা গাড়ি নেই। নেই পর্যাপ্ত লোকবলও। ফলে এতো নিকটে থেকেও কোন কাজে আসেনি কোটিকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীতে ঘুঙ্গিয়ারগাঁও কালী মন্দির পূজা ম-পে গ্রামের সব নারী-পুরুষ অঞ্জলি দেয়ার জন্য ব্যস্ত ছিলেন। এমন সময় লেগে যায় আগুন। পরে পার্শ্ববর্তী থানা মসজিদের ইমাম মাইকে আগুন লাগার বিষয়ে জানালে থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন স্থানীয়রা। এরমধ্যেই ৪টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের শাল্লায় দায়িত্বপ্রাপ্ত জয়ন্ত সিংহ বলেন, আমি বাড়িতে এসেছি। শাল্লায় আমাদের কার্যক্রম ও লোকবল না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আমরা কিছুই করতে পারছি না। তবে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী পংকজ দাশ বলে, আগুন লাগার পরপরই বিকট শব্দ হয়েছে। এটি সিলিন্ডার গ্যাসের নাকি ফ্রিজের তা বলতে পারব না। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক কোটি টাকার মত হবে। তবে ৪টি ভাড়াটিয়া পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি বিকাশ দাশ, শ্রীবাস দাশ, ব্যবসায়ী সঞ্জীবন দাশ ও পল্টু তালুকদারের।
এ বিষয়ে বাহাড়া ইউপির চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টু বলেন, আমি আগুন লাগার খবর শুনে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে যাই। শাল্লা কলেজের প্রভাষক মহিতোষ দাশ ও কুমুদ রঞ্জন মজুমদারের চারটি বসতঘর পুড়ে যায়। এতে ব্যাপক পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে প্রায় কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের থানায় সংরক্ষিত আগুন নিয়ন্ত্রণের দুটি যন্ত্র এবং সবার সহযোগিতায় আগুন নেভানো হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি কি পরিমাণ হয়েছে এখনো তা বলা যাচ্ছে না। তবে আমাদের তদন্ত চলছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমরা তদন্তপূর্বক আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবো। অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করার সুযোগ থাকলে অবশ্যই করব।