শহীদনূর আহমেদ ::
সুনামগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নবনির্মিত ১০ তলা ভবন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। ভবনটি চালু হলে আদালতের এজলাসসহ বিচার প্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে। বিচার কাজের জন্য তাদের ছোটাছুটির অবসান হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
আইন ও বিচার সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে দৃষ্টিনন্দন ভবনটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছে গণপূর্ত বিভাগ। ইতোমধ্যই ভবনটির শতভাগ কাজ স¤পন্ন করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। নবনির্মিত ভবনটি হস্তান্তরে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রলায়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। চলতি অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ অথবা আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে উদ্বোধন হতে পারে জেলার বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভবনটি।
সুনামগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ জানিয়েছে, প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে জজ কোর্টের পূর্বদিকে ১.৭৫ একর জমির উপর নির্মিত ভবনটি নির্মাণ করতে ৫ বছরের অধিক সময় লেগেছে। ৬৪ জেলায় সরকারের মেগা প্রকল্পের আওতায় এই ভবনে থাকছে সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। বহুতল ভবনে উঠানামার জন্য রাখা হয়েছে লিফট সুবিধা।
এদিকে আদালতের কার্যক্রমের সঙ্গে স¤পৃক্তরা জানান, ভবনটি চালু হলে আদালত অঙ্গনে দীর্ঘদিনের অবকাঠামো সংকট দূর হবে এবং বিচার প্রার্থীরাও স্বস্তি পাবেন। একই সাথে আদালতের কার্যক্রমে গতিশীলতা আসবে। এতে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবেন।
জানাযায়, এতোদিন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ভবন নির্মাণের পর থেকেই সেখানে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। স্থানাভাবে গাদাগাদি করে আদালতের কার্যক্রমের সঙ্গে স¤পৃক্তদের কাজ করতে হয়। এতে অনেক সময় ব্যয় হয়। এছাড়া বিচারপ্রার্থীদেরও পড়তে হয় নানা সমস্যায়। সরকার নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথক করার পর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা শুরু করে। এরই লক্ষ্যে সরকার সারাদেশে সর্বাধুনিক ও সুবিধাস¤পন্ন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
সাধারণ বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নতুন ভবন চালু হলে বিচারপ্রার্থীরা সুবিধা পাবেন। এজলাস বাড়বে। বৃহৎ পরিসরে সংশ্লিষ্টরা কাজ করতে পারবেন। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা থেকে মামলার কাজে আসা আব্দুল কাইয়ূম বলেন, জায়গা সংকটে আমাদের উপজেলার বিচারক দ্বিতীয় সিফটে উঠেন। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আদালতে সময় ক্ষেপণ হয়। নতুন ভবনে উঠলে আমাদের ভোগান্তি কমে আসবে।
সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ স¤পাদক অ্যাড. শেরেনূর আলী বলেন, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্মাণকাজ স¤পন্ন হওয়ায় বিচারপ্রার্থী সাধারণ লোকজন উপকৃত হবেন। এজলাস বাড়বে। এতে মামলার জটও কমবে। কারণ অনেক সময় একই এজলাসে একাধিক বিচারককে কাজ করতে হয় পৃথকভাবে। এতে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি হয়। এই ভবনের কাজ শেষ হলে বিচারক, বিচারপ্রার্থীসহ সাধারণ মানুষেরই উপকার হবে।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ইকবাল শিকদার বলেন, সুনামগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। এখন কেবল উদ্বোধনের অপেক্ষা। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে উদ্বোধন হয়ে যাবে।