নির্মল চন্দ্র সরকার ::
মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে স্মৃতি বিজড়িত স্থান মহিষখলা। মধ্যনগর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী এই মহিষখলাতে ছিল মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর সাব সেক্টর। কোটি টাকা ব্যয়ে সেখানে নির্মিত স্মৃতিসৌধটি নদী ভাঙনে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় রক্ষণাবেক্ষন ও প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিবর্গ।
জানা যায়, সাভার স্মৃতিসৌধের পরে মহিষখলায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়। মহিষখলা নদীর তীরে সুনামগঞ্জের তৎকালীন জেলা পরিষদ প্রশাসক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবীর ইমনের পরিকল্পনায় ও স্থপতি রাজন দাসের নকশায় এবং গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’ গানটির কথা মাথায় রেখে মহিষখলা নদীর পূর্ব দিকে ১৮ হাজার ৭০০ বর্গফুট জায়গায় ২০১২ সালে স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করা হয়। জেলা পরিষদের অর্থায়নে এর নির্মাণ ব্যয় হয়েছিল ১ কোটি ৯ লাখ টাকা। তবে বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে স্মৃতিসৌধটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহিষখলা নদীটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে স্মৃতিসৌধের পশ্চিম পাড়ের মাটি নদীগর্ভে ধসে পড়েছে। যে কোন সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে এই স্থাপনাটি। বছরখানেক আগে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ দিয়ে স্মৃতিসৌধটি রক্ষা করতে চাইলেও তা বেশিদিন টেকসই হয়নি। তাই স্থায়ীভাবে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে স্থাপনাটি যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আবদুল হক বলেন, মহিষখলা স্মৃতিসৌধটি বাংলাদেশের দ্বিতী বৃহত্তম। তাই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারকটি রক্ষা করা সকল নাগরিকের কর্তব্য। তাই এটি রক্ষায় প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ জরুরি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নূর নবী বলেন, এই স্মৃতিসৌধটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। তাই স্মৃতিসৌধটি রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ এবং সরকারি অর্থায়নে সার্বক্ষণিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন কর্মচারি নিয়োগের জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট বলেন, স্মৃতিসৌধটি জেলা পরিষদের স্থাপনা। তাই স্মৃতিসৌধটির দেখভাল করার দায়িত্ব জেলা পরিষদের। আমি দ্রুত লোক পাঠিয়ে স্মৃতিসৌধের পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।