স্টাফ রিপোর্টার ::
“দেশব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন : তামাক কো¤পানি বেপরোয়া” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় দৈনিক সুনামকণ্ঠ কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, পল্লী উন্নয়ন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা ‘পদ্মা’। সংবাদ সম্মেলন থেকে জীবনের জন্য, পরিবারের জন্য তামাক কো¤পানির আগ্রাসন প্রতিহত করার আহ্বান জানানো হয়।
দৈনিক সুনামকণ্ঠ স¤পাদক ও প্রকাশক বিজন সেন রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পদ্মা’র নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান জানান, সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করতে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। অথচ তামাক কো¤পানিগুলো সরকারের জনস্বাস্থ্য রক্ষার এই মহৎ উদ্যোগকে ব্যাহত করতে নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এতে দেশের তরুণ সমাজ ধূমপানের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। তারা আইনভঙ্গ করে বিজ্ঞাপন প্রচারের পাশাপাশি, প্রণোদনা, রেস্টুরেন্টে ধূমপানের স্থান তৈরি করে দেয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি জানান, আজ দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অসংক্রামক রোগের চাপে বিপর্যস্ত। হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার এই তিন অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক ব্যবহার। দেশের তিন কোটির বেশি মানুষ তামাক ব্যবহার করছে। আর এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে তামাক ত্যাগ করাতে সরকার নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। অপরদিকে, কো¤পানিগুলো আইনভঙ্গ করে নতুন ধূমপায়ী তৈরি এবং দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করতে নানা অপকৌশল অবলম্বন করছে।
তিনি জানান, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৫ লক্ষাধিক মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছে। প্রতি বছর ৬১ হাজারের অধিক শিশু পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় এবং কর্মক্ষমতা হ্রাসের কারণে দেশে প্রতিবছর ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়।
তিনি আরও জানান, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা-৫ এ তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা স¤পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, কো¤পানিগুলো আইন ভঙ্গ করে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তামাকজাত দ্রব্যেও বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিক্রেতাদের উৎসাহিত করছে।
সংবাদ সম্মেলনে ৮টি সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। এগুলো হল- ১. দ্রুততম সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী চূড়ান্ত করা, ২. তামাক কো¤পানির প্রভাব থেকে নীতি সুরক্ষায় এফসিটিসি এর অনুচ্ছেদ, ৩. অনুসারে ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ গ্রহণ, ৩. জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি দ্রুত চূড়ান্ত এবং দেশব্যাপী যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করা, ৪. টাস্কফোর্স কমিটিসমূহ সক্রিয় করা, কমিটির ত্রৈমাসিক সভা নিয়মিতকরণ, সভার সিদ্ধান্তসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা; ৫. আইন লঙ্ঘনের দায়ে তামাক কো¤পানি/প্রতিনিধিকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি জেল প্রদান, ৬. আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কো¤পানিগুলোর বিরুদ্ধে যদাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা, ৭. তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন মনিটরিং কার্যক্রমের সাথে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে স¤পৃক্ত করা, ৮. প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।