স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়ায় প্রতিষ্ঠিত লবজান চৌধুরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নামের পাশে এখন থেকে কলেজ নামটিও যুক্ত হয়েছে। এবছর থেকে মাধ্যমিক শিক্ষার সাথে উচ্চ মাধ্যমিকেও পড়া যাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে। কলেজ যুক্ত হয়ে নতুন নাম হয়েছে লবজান চৌধুরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ।
রবিবার সকাল ১১টায় একাদশ শ্রেণির নবীন ছাত্রীদের বরণ ও ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের মধ্য দিয়ে স্কুলের পাশাপাশি কলেজ অধ্যায়ের নবসূচনা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দেওয়ান শামসুল আবেদীনের সভাপতিত্বে নবীন বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লবজান চৌধুরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ আব্দুল সাত্তার। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, সুরমা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ পৌর কলেজের প্রভাষক মো. আলমগীর, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল মান্নান চৌধুরী, নজির আহমেদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলওয়াত করে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী নিহরুবা খাতুন, গীতাপাঠ করেন একই শ্রেণির ঐশী রায়। স্বাগত বক্তব্য দেন সহকারী প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন। এরপর ফুল ও শিক্ষা উপকরণ দিয়ে নবীনদের বরণ করেন অতিথিবৃন্দ। নবীন ছাত্রীদের পাশাপাশি নবাগত প্রভাষকদেরও বরণ করা হয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহজালাল সুমন ও শেখ সামায়ূন রাশেদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষা জীবনে নানা বাধা-বিপত্তি আসবে, দরিদ্রতা আসবে। কিন্তু আমরা কোন বাধা বিপত্তি দরিদ্রতা মানবো না, আমরা এগিয়ে যাবো। আমরা শুধু একটা বুঝি পড়া, পড়া এবং পড়া।
প্রধান বক্তা প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ আব্দুল সাত্তার বলেন, আজ থেকে আমরা একটি মাইলফলক অর্জন করেছি। আমাদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিল আমরা এই স্কুলকে কলেজে রূপান্তর করবো। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে। এখন শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু। অনেকে বলেছে এই স্কুল শিক্ষার দিক দিয়ে দুর্বল, এখানে কলেজ হবে না। আমরা সেই দুর্বলতাকে কাটিয়ে দেখাতে চাই। এখানের কেউ দুর্বল নয়। সবাই যদি শিক্ষকদের কথা শুনো এবং নিজে একটু সিরিয়াস থাকো তাহলে সবাই ভালো রেজাল্ট করবে। যার যেখানে সমস্যা হবে এটা আমি দেখবো, সব দায়িত্ব আমি নিব। তোমরা শুধু পড়ার দিকে মনোযোগী হবে এই কথা দিতে হবে। এসময় গতবছর অর্থের অভাবে পড়তে না পারা এক মেধাবী এসএসসি পরীক্ষার্থীর কথা স্মরণ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রিন্সিপাল আব্দুল সাত্তার। তিনি জানান তার ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় সেই ছাত্রী এ+ পেয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে দেওয়ান শামসুল আবেদীন বলেন, স্কুলের সাথে আমার ৫০ বছরের সম্পর্ক। আমার বাবা আনোয়ার রাজার হাতে গড়া স্কুল এটি। এই স্কুলকে নিয়ে আমাদের পরিবারের অনেক স্বপ্ন। আজকে কলেজের অধ্যায় শুরু হওয়ার মাধ্যমে একটি স্বপ্ন পূরণ হলো।
নবীন বরণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র শিক্ষক সঞ্জয় কুমার চৌধুরী, প্রভাষক আখলাক হোসেন, তৌহিদা মুন্নী, হাবিবা আক্তার, শিক্ষার্থী সাবিহা জাহান নিগার, সালমা বেগম, সৌরভী আক্তার মাধুরি, হাবিবাব বেগম। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যালয়ের কলেজ শাখায় এ পর্যন্ত ৪৩ জন ছাত্রী ভর্তি হয়েছেন।