আমাদের দেশে অনেক কীছুই করা হয়, পালন করা হয় অনেক দিবস। মা-বাবা, পুত্র-কন্যাাদিসহ নাতিপুতি দিবস পালন করা হয়। এমনকি ভালোবাসা দিবসও পালিত হয়। কত দিবস! দিবসের কোনও শেষ নেই। প্রতিটি দিবসেই বেশুমার প্রত্যয়-প্রতিজ্ঞা করা হয়, প্রতিশ্রুতির বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু সভা-সমিতিতে ভাষণের ভূষণরূপে যতোসব প্রত্যয়প্রকাশ পর্যন্তই এইসব কর্মকা-ের সীমা, তারপর প্রতিশ্রুতির চোরাবালিতে সব কীছু ডুবে যায়। এরকমই একটি দিবস ‘জাতীয় কন্যা ও শিশু দিবস’।
একটি দৈনিকের একটি সংবাদপ্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবারে (৫ অক্টোবর ২০২৩) ‘জামালগঞ্জে জাতীয় কন্যা ও শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে কেয়ার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনায় কিশোরী দল ও উপজেলা মহিলা পরিষদের আয়োজনে সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি শেখ আয়েশা বেগম।’ তারপর উপস্থিতির বয়ান পর্যন্তই টেনেটুনে সংবাদের প্রলম্বন এবং দিবসটি সম্পর্কে আর কোনও সংবাদ জানা যায় না, বক্তারা কে কি বললেন তাও না।
কিন্তু কথা হলো, যখন ‘কন্যা ও শিশু দিবস’ পালন করা হচ্ছে, তখন ছাতক উপজেলার এক গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর মাথা কাটা লাশ পাওয়া গেছে গ্রামের পাশের ধানক্ষেতে। অথবা আইনানুসারে শিশুবয়স্করা অপহরণ, ধর্ষণ, উত্ত্যক্তকরণের শিকার হচ্ছে। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে খুন পর্যন্ত হচ্ছে। দেশে এইসব অপকর্ম হচ্ছে যখন তখন যত্রতত্র। তাই বিদগ্ধ মহলের ধারণা এইসব দিবস পালনের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনের প্রয়োগকে আরও সুনিশ্চিত করার দিকে নজর দিতে হবে। বাল্যবিয়ে বন্ধ করা, ধর্ষণ, উত্ত্যক্তকরণ বন্ধের বিষয়ে আপাতত আইনের যথাযথ প্রয়োগ ভিন্ন অন্য কোনও বিকল্প নেই। সমস্যা নিরসের বিকল্প পথে হাঁটতে চাইলে সেটা হবে সামগ্রিক অর্থে একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের বিষয়। সমজাকেই নারী-পুরুষের সাম্যতার নিরিখে বদলে দিতে হবে, যেখানে কন্যাশিশুর কোনও সমস্যাই থাকবে না।