1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:১৯ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সিলেট-চট্টগ্রাম অঞ্চলে শ্রেষ্ঠ সাঁতারু সুদীপ্ত

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার ::
গত জুলাই মাসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি সুদীপ্ত দাসের বাবা সুবোধ দাস মারা যান। সুবোধ দাসের মৃত্যুর পর দারিদ্র্যতার কারণে অনেকটা লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিভাগীয় পর্যায়ে সাঁতারে বিজয়ী হওয়া সুদীপ্ত দাসের। তার মা অমায়া রানী দাস দারিদ্র্যতার জন্য লেখাপড়া বন্ধ করতে বলেন ছেলে সুদীপ্তকে। অদম্য সুদীপ্ত মায়ের এমন কঠিন নির্দেশে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন।
ছেলের এমন অবস্থা দেখে পুনরায় স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া করার অনুমতি দেন তার মা অমায়া রাণী দাস। সুদীপ্ত দাস বর্তমানে শাল্লা সদরে শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ছেন। সামনে তার এসএসসি পরীক্ষা। তবুও সুদীপ্ত হাওর অধ্যুষিত অঞ্চলের ছেলে বলেই স্বপ্ন দেখতেন একদিন বড় সাঁতারু হওয়ার। সেই থেকেই শুরু তার অনুশীলন।
৫০তম জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা সমিতির গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সাঁতারে উপজেলা পর্যায়ে অংশ নেন সুদীপ্ত। সেখানে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন। কিন্তু অর্থাভাব সুদীপ্ত’র জেলা পর্যায়ে অংশগ্রহণই অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে আরেকটি সমস্যা হলো শাল্লা উপজেলা সদর ছাড়া আর কোন শহরেই যাওয়া হয়ে ওঠেনি তার। জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরের রাস্তাঘাট কিছুই চেনেন না সুদীপ্ত। এজন্যে তিনি শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেবের কাছে যান। আবু তালেব সুদীপ্ত দাসের কথা শুনে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেন। পাশাপাশি সুদীপ্তকে সুনামগঞ্জ জেলা পর্যায়ে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পাঠান। জেলা পর্যায়ে ১ম স্থান অর্জন করেন তিনি। পরে গত ২০ সেপ্টেম্বর সিলেট বিভাগেও সাঁতারে বিজয়ী হন সুদীপ্ত দাস। তারই ধারাবাহিকতায় ২৫ সেপ্টেম্বর দেশের ৪টি অঞ্চলের মধ্যে (সিলেট, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম) বকুল আঞ্চলে ১০০মিটার চিৎ সাঁতারে বিজয় অর্জন করেন সুদীপ্ত। ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে তিনি ৩টি বিজয়ী সনদ ও ২টি মেডেল নিয়ে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন। এসময় শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব, শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস, শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফ মোহাম্মদ দুলাল ও শাল্লা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত সেন সুদীপ্ত দাসকে পারিবারিক নানান প্রতিকূলতার মধ্যদিয়েও সাঁতারে কৃতিত্ব অর্জন করায় অভিনন্দন জানান।
এ বিষয়ে সুদীপ্ত দাস বলেন, এ কৃতিত্ব শাল্লাবাসীর। কারণ আমি শাল্লা থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি সাঁতার শিখছি। আমি আত্মবিশ্বাসী জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করতে সক্ষম হবো। সুদীপ্ত দাস আরও বলেন, বছরে ৬মাস আমি কৃষিকাজ করে লেখাপড়ার খরচ যোগাড় করি। আমার বাবা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ৫ বছর আগে তিনি একটি হাত হারিয়ে ফেলেন। তখন সমস্ত জমিজমা বিক্রি করে বাবার চিকিৎসা করাই।
বর্তমানে সুদীপ্ত’র বড় ভাই শাল্লা উপজেলার সাতপাড়া বাজারে শাকসবজি বিক্রি করে সংসার চালান। ছোট একটি বোনও আছে তাদের।
উল্লেখ্য, সুদীপ্ত দাসের জন্ম নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার নগর ইউপির চাঁদপুর গ্রামে। তিনি বর্তমানে শাল্লা সদর সংলগ্ন ডুমরা গ্রামের বাসিন্দা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com