1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:২৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ : তিন বছরেও মামলার অগ্রগতি নেই

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া নারীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে বিচারকাজ শুরু হয়নি। বর্বরোচিত ওই ঘটনার তিন বছর পূর্ণ হয়েছে রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর)। কিন্তু আলোচিত মামলার কোনও কার্যক্রম দেখা যায়নি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে দক্ষিণ সুরমার এক যুবক তার নববিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে এমসি কলেজ ক্যা¤পাসে ঘুরতে এসেছিলেন। সন্ধ্যার পর কলেজের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান করছিলেন তারা। এ সময় কয়েকজন যুবক তাদের ঘিরে ধরে। একপর্যায়ে তাদের জোরপূর্বক জিম্মি করে গাড়িতে তুলে কলেজের ছাত্রাবাসের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। স্বামীর কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে তারা।
পরে জানা যায়, ধর্ষণকারী ওই যুবকরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। ওই ঘটনায় গত বছরের জানুয়ারিতে ধর্ষণ মামলার ও চলতি বছরের মে মাসে চাঁদাবাজির মামলার অভিযোগ গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুই হয়নি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শহীদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মামলার এখন পর্যন্ত কোনও অগ্রগতি নেই। বাদীপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে মামলা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হয়। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় মামলাটির স্থানান্তর প্রক্রিয়া থমকে যায়।
তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে উচ্চ আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে সরকারের পক্ষে ‘অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড’ হরিপদ পাল কর্তৃক লিভ টু আপিল করা হয় বলে মামলার বাদিকে নোটিশ করা হয়। ওই নোটিশ প্রায় দুই মাস আগে হস্তগত হয়েছে। এরপর থেকে মামলাটি স্থানান্তরপ্রক্রিয়া থমকে গেছে। এমন অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সরকারপক্ষ এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে বিলম্বিত করতে চাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
গণধর্ষণের ঘটনায় সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চান্দাইপাড়ার তাহিদ মিয়ার ছেলে সাইফুর রহমান (২৮), হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বাগুনীপাড়ার শাহ জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উমেদনগরের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), জকিগঞ্জের আটগ্রামের মৃত অমলেন্দু লস্কর ওরফে কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৬), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুরের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলাম (২৫), কানাইঘাট উপজেলার লামা দলইকান্দির (গাছবাড়ী) সালিক আহমদের ছেলে মাহফুজুর রহমান মাসুম (২৫), সিলেট নগরীর গোলাপবাগ আবাসিক এলাকার (বাসা নম্বর-৭৬) মৃত সোনা মিয়ার ছেলে আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল (২৬) ও বিয়ানীবাজার উপজেলার নটেশ্বর গ্রামের মৃত ফয়জুল ইসলামের ছেলে মিজবাউল ইসলাম রাজনকে (২৭) অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়।
মামলায় ৫২ জনকে সাক্ষী রাখা হয়। ঘটনার মাত্র দুই মাস ৮ দিন পর ১৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রটি আদালতে জমা দেওয়া হয়। এতে আসামি রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুমকে ধর্ষণে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন। ঘটনার পরে গ্রেফতার ৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সিলেট ওসমানী মেডিক্যালের ওসিসির মাধ্যমে ডিএনএ সংগ্রহ করে ঢাকায় সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠায় পুলিশ। নমুনা সংগ্রহের প্রায় দুই মাস পর ডিএনএ রিপোর্ট এসে পৌঁছে। ডিএনএ রিপোর্টে ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর ও মাহবুবুর রহমান রনির ডিএনএ ‘ম্যাচিং’ পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ছাত্রাবাস থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় সাইফুর রহমান ও শাহ মাহবুবুর রহমান রনিকে আসামি করে অস্ত্র আইনে আরেকটি অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ঘটনার এক মাস ২৭ দিন পর অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এদিকে গ্রেফতারের পর আট আসামির সবাই আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
আসামিদের মধ্যে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, মিজবাহুল ইসলাম রাজন ও আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ১৯ বছর বয়সী ওই নারীকে সরাসরি ধর্ষণ করে। রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম ধর্ষণে সহযোগিতা করে। আট আসামির সবাই ছাত্রলীগের টিলাগড় গ্রুপের সক্রিয় কর্মী ছিল।
মামলার বাদী বলেন, মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিয়েছে। তবে তিনি ন্যায় বিচার পাবেন এবং আসামিরা শাস্তির আওতায় আসবেন বলে আশাবাদী।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com