1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৩৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নিষিদ্ধ জালে অবাধে মাছ শিকার

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

শহীদনূর আহমেদ ::
হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাওরে কোণাজাল, চায়নাজাল, কারেন্টজালসহ বিভিন্ন রাক্ষসী জাল দিয়ে অবাধে চলছে পোনা ও মা মাছ নিধন। প্রতি বছর সরকারিভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হলেও বাড়ানো যাচ্ছে না মাছের সার্বিক উৎপাদন। প্রকাশ্যে দিবালোকে কিছু অসাধু জেলেরা পোনামাছ শিকার করলেও তাদের দমনে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। হাওর, নদী-নালা, খালবিলে অবাধে মা মাছ ও পোনা মাছ শিকারের ফলে বিলুপ্তের পথে অনেক দেশীয় প্রজাতির মাছ। মাছের উৎপাদন বাড়াতে কোণাজাল ও কারেন্ট জাল ব্যবহারকারীদের কঠোর হস্তে দমন করার দাবি হাওরপাড়ের মানুষদের।
স্থানীয় মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মাছের বংশ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারাদেশে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত হাওর, নদী-নালা, খালবিলে ৯ ইঞ্চির নিচে রুই, কাতলা, কালাবাউশ, মৃগেল, কালিয়াসহ রুই জাতীয় মাছের পোনাসহ মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। কিন্তু জেলেদের বিকল্প জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয় মৎস্যজীবীরা হাওরগুলো থেকে অবাধে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে পোনা মাছ ধরে বিক্রি করছেন।
হাওরপাড়ের বাসিন্দারা জানান, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে দিনরাতে নিষিদ্ধ কোণাজাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরছে অসাধু জেলেরা। তাদের অনেকেই মৌসুমী মৎস্যজীবী। বর্ষার ছয় মাস তারা হাওরে মাছ ধরে। কোণা জালের ছিদ্র মশারির ছিদ্রের চেয়ে ছোট হওয়ায় মাছের একেবারে ছোট পোনাটিও উঠে আসে। এবার হাওরে পানি কম হওয়ায় জালে পোনা মাছ ধরা পড়ছে বেশি। পানি বেশি থাকলে মাছের পোনা ধরা পড়ে কম।
সম্প্রতি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার, কানলার হাওর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার খরচা, আঙ্গারুলি, শান্তিগঞ্জের খাই, নলোয়ার, সাংহাই, দেখার হাওর, তাহিরপুরের শনি ও জামালগঞ্জের হালির হাওর ঘুরে কোণাজালের ব্যাপক ব্যবহার দেখা গেছে। কোণা জালের পাশাপাশি চায়না জাতের এক ধরনের প্লাস্টিকের ফাঁদ জাল ব্যবহার লক্ষ করা গেছে। যা দিয়ে মা মাছ ও পোনা মাছ অবাধে ধরা পড়ছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, নিষিদ্ধ কোণাজাল ও চায়নাজাল নিয়ে সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত, আবার ভোর থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত পালা করে চলে পোনা ও মা মাছ শিকার। একেকটি কোণাজালের সাথে ৬-৮ জন লোক ও দড়াজালে ৪ জন করে দল গঠন করে হাওরে হাওরে পোনা মাছ শিকারে নামতে দেখা যায়।
প্রতিটি কোণাজাল দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২ থেকে ৩ মণ মাছ শিকার করা হচ্ছে। এ হিসেবে প্রতিদিন জেলার বৃহৎ হাওরগুলো থেকে কয়েক টন মাছ শিকার করা হচ্ছে।
একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার হিসাবে, হাওরের ৫৫ প্রজাতির মাছ বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে মহাশোল, রিটা, নানিন, বাঘাইড়সহ পাঁচ প্রজাতির মাছ অতি সংকটাপন্ন এবং আরও ১৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে সংকটাপন্ন অবস্থায়। যত দ্রুত সম্ভব কোণাজাল, কারেন্ট জালের ব্যবহার বন্ধের দাবি হাওরবাসীর।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা বারুল নাহিদ বলেন, হাওরে এখন কোণা জাল ও চায়না জালে সয়লাব। যা দিয়ে অবাধে পোনা মাছ ধরা হচ্ছে। এসব জালের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। প্রশাসনের কঠোর নজদারি প্রয়োজন। এক সময় যে মাছ হাওরে মিলতো তা হারিয়ে গেছে। আরও কিছুদিন গেলে অনেক দেশী মাছ হারিয়ে যাবে।
পরিবেশসম্মত জলমহাল ব্যবস্থাপনায় জাতীয় পুরস্কার পাওয়া সুনামগঞ্জের সৈয়দ মুহাম্মদ মনোয়ার বলেন, এমনিতেই হাওরে দিন দিন মাছ কমছে। মাছের উৎপাদন বাড়াতে প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও জেলেদের সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে এই অঞ্চলে মাছের সংকট আরও দেখা দেবে।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শামসুল করিম বলেন, কোণাজাল, কারেন্ট জালের ব্যবহার বন্ধে প্রতি মাসে জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে অভিযান পরিচালনা করা হয়। গত মাসে শান্তিগঞ্জে অভিযান চালিয়ে কোটি টাকা মূল্যের কারেন্ট জাল জব্দ করে আগুনে পুড়ানো হয়েছে। মাছের উৎপাদন বাড়াতে এবছর জেলায় ৪ মেট্রিক টন পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে।

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com