স্টাফ রিপোর্টার ::
বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) কার্যালয়ের উদ্যোগে ৩ দিনব্যাপী খাদ্যভিত্তিক পুষ্টি (ফলিত পুষ্টি) বিষয়ক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। শহরের মল্লিকপুরস্থ বারটান আঞ্চলিক কার্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ বৃহ¯পতিবার শেষ হয়। একই সাথে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মোট ৬০ জন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণে অংশ নেন। তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও অঞ্চল প্রধান মো. মুশফিকুছ সালেহীন তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেন। প্রশিক্ষক ছিলেন জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম, সদর উপজেলা কৃষি অফসার মো. রাকিবুল আলম, পরিবার পরিকল্পনা অফিসার বিশ্বজিৎ কৃষ্ণ চক্রবর্তী, সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ওমর ফারুক, বারটান আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নুরুন নবী।
প্রশিক্ষণ শেষে নানা অভিজ্ঞতার আলোকে বক্তব্য রাখেন ক্বারী মাও. শিক্ষক মো. আব্দুল করীম ও শিক্ষক নুসরাত সুলতানা।
প্রশিক্ষণে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ইমাম ও পুরোহিত, মৎস্য কর্মকর্তা, প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, কৃষাণ-কৃষাণী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের মাঠকর্মী, এনজিও কর্মীরা অংশ নেন। এ সময় বারটানের কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রশিক্ষকেরা প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাবারে শক্তিদায়ক খাবার, বৃদ্ধিসাধন ও ক্ষয়পূরণকারী খাবার, রোগ প্রতিরোধক খাবার, অপুষ্টিজনিত রোগসমূহের প্রতিকারক খাবার বিষয়ে আলোকপাত করেন।
প্রশিক্ষকগণ বলেন, দৈনন্দিন নিরাপদ সবজি খেতে চাইলে নিজের বাড়ির আঙিনায়, ঘরের চালে, টবে, ছাদে সবজি চাষ করতে পারেন। চাল কুমড়া, শিম, পেঁপে, ডুগি, শাক, মরিচ ইত্যাদির চাষ করা যেতে পারে।
তাঁরা বলেন, এক সময় সরিষার তেল দিয়ে আমরা সুস্বাদু তরকারি খেতাম। আজ আমরা সোয়াবিন তেল ব্যবহার করছি রান্নায়। কিন্তু সোয়াবিন তেলের চেয়ে সরিষার তেল ও সূর্যমুখির তেল অনেকটা নিরাপদ। সরিষার তেলে রান্নার করলে তরকারিতে সরিষার ঘ্রাণ পাওয়া যায়। এই ঘ্রাণ হলে কোনো সমস্যা নেই।
তাঁরা বলেন, এক কেজি নিরাপদ ও বিশুদ্ধ ভালমানের সোয়াবিনের মূল্য হবে অন্তত ৩ হাজার টাকা। সেই স্থানে আমরা মাত্র ১৮০ টাকা কেজিতে কেমন ভাল সোয়াবিন ব্যবহার করছি।
তাঁরা বলেন, প্রতিদিন একজনের খাবারের তালিকায় আড়াই শ’ গ্রাম সবজি, দেড় শ’ গ্রাম মাছ বা মাংস এবং একটি ডিম। পঁচিশ গ্রাম ডাল, দুই শ’ গ্রাম ভাত জাতীয় খাবার। মাসে ৫শ’ গ্রাম তেল। পানি প্রতিদিন ২ থেকে ৩ লিটার। গর্ভবতী মায়েদের আরও বেশি পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু আমরা প্রতিদিনের খাবার নিয়মিত না খেয়ে রোগাক্রান্ত হচ্ছি। চিকিৎসা খাতে খরচ করছি জীবনের উপার্জিত সব টাকা।
শিশুদের খাবার বিষয়ে প্রশিক্ষকেরা বলেন, প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রঙিন শাক-সবজি রাখা খুবই জরুরি। দুধ, মাছ, মাংস, ডিম ও কচু প্রতিদিন খাওয়াতে হবে।
প্রশিক্ষকেরা বলেন, আমড়া, আমলকি, লেবু, পেয়ারা, পেঁপে আম, জাম, আপেলসহ অন্যান্য ফলমূল শরীরের জন্য খুবই উপকারী। নিরাপদ ও নিয়মিত খাবার খেয়ে সুস্থ থাকার আহ্বান জানান প্রশিক্ষকেরা।