বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ শহরতলির হবতপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত একটি কৃষি খামারের উচ্চ ফলনশীল আগাম মরিচ ও টমেটোর প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার চারা বিষাক্ত স্প্রে দিয়ে নষ্ট করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে রবিবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসের সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় খামারির প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক মাস আগে জামালগঞ্জ উপজেলার কালিপুর গ্রামের সফল খামারি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের হবতপুর গ্রামে জমি ভাড়া নিয়ে উচ্চ ফলনশীল আগাম মরিচ ও টমেটোর চারা উৎপাদনের একটি প্রকল্প চালু করেন। গত আগস্ট মাসে তিনি ‘বিন্দু, হটমাস্টার ও কারেন্ট’ নামের তিনটি প্রজাতির ৯৫ হাজার কাঁচা মরিচের চারা উৎপাদন করেন। একই খামারে তিনি উদয়ন প্রজাতির আরো ৩৫ হাজার উচ্চ ফলনশীল আগাম টমেটো চারা উৎপাদন করেন। এসব মরিচ ও টমেটো চারা উৎপাদন করে হবতপুর গ্রামেই তিনি ৫ একর জমিতে চলতি সপ্তাহ থেকে রোপণ করার কথা ছিল। যা আসছে শীতকালীন আগাম সবজি বাজারের লক্ষ্য নিয়ে তিনি এগুচ্ছিলেন। ৫ একর জমি থেকে তিনি মরিচ ও টমেটোর প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বিক্রি করার কথা ছিল। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে তিনি চারা উৎপাদন শুরু করেছিলেন।
রবিবার ভোররাতে দুর্বৃত্তরা তার খামারে ঢুকে বিষাক্ত স্প্রে ছিটিয়ে চারাগুলো নষ্ট করে দিয়েছে। সকালে খামারে গিয়ে দেখতে পান সব চারা মরে গেছে। তিনি তাৎক্ষণিক বিষয়টি সদর উপজেলা কৃষি অফিসকে অবগত করেন। রবিবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাকিবুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারি ফারুক আহমদ বলেন, আমি একজন ছোট খামারি। এর আগেও জেলা পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছি। আমার এলাকায় জমি না থাকায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হবতপুরে এসে জমি ভাড়া নিয়ে একটি প্রকল্প চালু করেছিলাম। কিছুদিন আগে কয়েকজন দুষ্কৃতকারী আমার প্রকল্পের শ্রমিককে হুমকি ধমকি দিয়ে গিয়েছিল। আমার আশঙ্কা তারাই এই শত্রুতা করেছে। তিনি বলেন, আমার প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হলেও আমি এই প্রজেক্ট থেকে নষ্ট হওয়া চারায় ৫ একর জমি চাষ করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বিক্রি করতে পারতাম। আমি এ বিষয়ে কৃষি বিভাগকে অবগত করেছি। এখন থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাকিবুল আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত খামারি আমাকে বিষয়টি জানানোর পর রবিবার সন্ধ্যার আগে ঘটনাস্থল দেখে এসেছি। এটা বিষাক্ত স্প্রের কারণেই হয়েছে। এতে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেছে কৃষকদের। আমরা কৃষককে আইনী ব্যবস্থা নিতেও অনুরোধ করেছি।