হোসাইন আহমদ ::
শান্তিগঞ্জ-ডুংরিয়া সড়কের প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়কের অন্তত ২০ থেকে ২৫টি স্থানে বেহাল দশা হয়েছে। এসব স্থানে বড় গর্ত এবং খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও পিচ ওঠে কংক্রিট বের হয়েছে। কোথাও কিছু দূর পরপর সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। ভাঙাচোরা এসব স্থান যানবাহনের জন্য হয়ে উঠছে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সড়কের বড় বড় গর্তে বৃষ্টির পানি জমে প্রায়ই দুঘর্টনায় পড়ছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকসা ও মোটরসাইকেল আরোহীরা। বিশেষ করে রাতের বেলায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। ২০২২ সালের বন্যায় শান্তিগঞ্জ-রজনীগঞ্জ সড়কের শান্তিগঞ্জ থেকে ডুংরিয়া বাজার হয়ে গ্রামের শেষ সীমানা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কি.মি. সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রায় এক বছরের অধিক সময় ধরে এমন বেহাল অবস্থা চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন জয়কলস ও পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়ন, ডুংরিয়া হাইস্কুল এন্ড কলেজ, জয়সিদ্ধি হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আশপাশের এলাকার জনসাধারণ, ধান-চালকল মিলের পণ্যসহ যাত্রীবাহী যানবাহন আসা-যাওয়া করে থাকে। এতে যাত্রী ও গাড়িচালকদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন সময় সড়ক সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদাররা ঠিক মতো কাজ করেননি। ফলে সড়কের বিভিন্ন স্থান সংস্কারের কিছু দিন পরই ভেঙে যায়। বিভিন্ন সময়ে খোয়া ও ইটের সুরকি দিলেও তাও যৎসামান্য। কিছুদিন ভালভাবে চললেও তা আবারও ভেঙে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির শান্তিগঞ্জ থেকে ডুংরিয়া বাজার এলাকার সুহেল কমিউনিটি সেন্টারের সামনে, মুক্তাকিন লন্ডনীর বাড়ির সামনে, কবির মিয়ার বাড়ির সামনে, ইলিয়াছ মিয়ার বাড়ির সামনে, এনামুল হকের বাড়ির সামনে, ইসরাইল মিয়ার বাড়ির সামনে, মোহাম্মদ আলীর বাড়ির সামনে, হারুন মিয়ার বাড়ির সামনে, শিবপুর পূর্বপাড়া মসজিদের সামনে, মনোয়ার হোসেনের বাড়ির সামনে, শিবপুর পশ্চিম পাড়া কবরস্থানের সামনে, শাহবাজ মিয়ার সামনে ও পিছনে, ডুংরিয়া হাইস্কুলের ব্রিজের পূর্ব পার্শ্বে, ডুংরিয়া হাই স্কুলের পশ্চিম পাশে ও ডুংরিয়া বাজারের পূর্ব পার্শ্বেসহ অসংখ্য জায়গায় সড়ক ভেঙেচুরে গেছে। ওই অংশগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ।
শিবপুর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, দীঘির্দন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কটি অনেক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। অথচ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো লোকজন যাতায়াত করেন। ফলে যাতায়াতকারী লোকজনদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
শিবপুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি মাসুক মিয়া বলেন, আমি বৃদ্ধ লোক। বাড়ি থেকে দিনে ২/৩ বার শান্তিগঞ্জ বাজারে আসা যাওয়া করতে হয়। রাস্তার বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। রাস্তাটি অনেক দিন থেকে ভাঙাচোরা।
ডুংরিয়া গ্রামের অটোরিকসা চালক মোস্তাকিন মিয়া জানান, আমি এ সড়কে অটোরিকসা চালাই। অধিকাংশ জায়গাই খারাপ। ভাঙ্গাচোরা রাস্তার কারণে প্রায়ই অটোরিকসা মেরামত করি। আয়ের পুরোটাই মেরামত কাজে চলে যাচ্ছে। ভাঙা সড়কের ঝাঁকুনিতে যাত্রীদের নিয়ে উল্টে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তারপরও রুটি-রুজির কারণে এসড়কে গাড়ি চালাই।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আল-নুর তারেক বলেন, শান্তিগঞ্জ-রজনীগঞ্জ সড়কের শান্তিগঞ্জ বাজার থেকে প্রায় সাড়ে ৩ কি.মি সড়ক ২০২২ সালের বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চলতি বছরে আমরা শান্তিগঞ্জ বাজার থেকে ডুংরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশের কালভার্ট পর্যন্ত আড়াই কি.মি. সড়কের প্রাক্কলন তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। ডুংরিয়া বাজারের পর থেকে বাকি অংশের কাজ চলমান কাজের সঙ্গে ধরা আছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেলে খুব শিগগিরই সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হবে।