1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

দাম বাড়ছে বিশ্ববাজারে : দেশে চালের মজুদ পর্যাপ্ত

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বিশ্বে চালের বাজারে এখন টালমাটাল অবস্থা। ভারত-ভিয়েতনামসহ চাল রফতানিকারক দেশগুলো একদিকে চাল রফতানি কমাচ্ছে, অন্যদিকে চালের রফতানি শুল্ক বাড়াচ্ছে। এর প্রভাবে চাল আমদানিকারক দেশগুলোতে এ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে এবং এর মূল্যস্ফীতিতে রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে।
বাংলাদেশও বিশ্ববাজার থেকে চাল আমদানি করে। তবে এ বছরে দেশে ধানের বা¤পার ফলন এবং সরকারি খাদ্যগুদামে পর্যাপ্ত চালের মজুদ থাকায় বিশ্ববাজারের অস্থিরতার প্রভাব দেশের বাজারে পড়ার আশঙ্কা কম। বৈশ্বিক অস্থিরতাকে পুঁজি করে যদি দেশের ব্যবসায়ীরা চালের বাজারে কোনো সিন্ডিকেট না করে তা হলে দেশে চালের দাম নতুন করে বাড়বে না বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষক ও খাদ্য মন্ত্রণালয়।
বৈশ্বিক চাল বাণিজ্যের ৪০ শতাংশই ভারতের দখলে। অর্থাৎ ভারত চাল রফতানিতে শীর্ষ দেশ। গত বছর ভারত বিশ্বের ১৪০টি দেশে ২ দশমিক ২ কোটি টন চাল রফতানি করেছে। এর মধ্যে ছয় লাখ টন ছিল অপেক্ষাকৃত সস্তা ইন্ডিকা সাদা চাল। গত জুলাই মাসে সেই ইন্ডিকা চালের রফতানি ভারত বন্ধ করে দিয়েছে। গত বছর ভাঙা চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাসমতি নয় এমন চালের রফতানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয় দেশটি। মূলত জুলাই মাসে ভারত সরকারের আরোপ করা রফতানি নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বব্যাপী চালের দাম উর্ধ্বমুখী হতে থাকে।
শুধু তাই নয়, এর প্রভাবে অন্য দুই শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামেও বাড়ছে চালের দাম। এর প্রভাবে বাংলাদেশে চালের দাম বাড়বে কি না এ শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, চালের প্রধান ক্রেতাদের মধ্যে চীন, ফিলিপাইন নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশেও বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। ফিলিপাইনে তো গত পাঁচ বছরের মধ্যে চালের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে।
তবে অন্য দেশের পরিস্থিতি এখন যেমনই হোক দেশের বাজারে এ মুহূর্তে চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। কেননা দেশে এবার ধানের বাম্পার ফলন, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পর্যাপ্ত চালের মজুদ থাকা এবং এ বছর ভারত থেকে চাল আমদানির কোনো পরিকল্পনাও নেই। তাই ভারতের রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রভাবে দেশের বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মমতাজ উদ্দিন বলেন, চাল নিয়ে বিশ্ববাজার পরিস্থিতি যেমনই হোক তার প্রভাব আমাদের দেশে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। কারণ চালসহ খাদ্যশস্য মজুদ পরিস্থিতিতে আমরা এখন উত্তম পর্যায়ে রয়েছি। সরকারি খাদ্যগুদামে এখন রেকর্ড পরিমাণে চাল মজুদ রয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে ব্যক্তি পর্যায়ের মিল এবং পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এবং সরবরাহও ভালো। সবচেয়ে বড় কথা, আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংস¤পূর্ণ। তাই খাদ্য নিয়ে এ মুহূর্তে আমাদের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বোরো মৌসুমের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর সংগ্রহ কার্যক্রমের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। এ বোরো মৌসুমে সরকার সাড়ে ১৪ লাখ টন চাল এবং ৪ লাখ টন ধান সংগ্রহ করবে। ইতিমধ্যেই আমরা আমাদের বোরো সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা প্রায় অর্জন করে ফেলেছি। আগামী কয়েক দিন সরকারি গুদামের চালের মজুদ আরও বাড়বে। মজুদ আরও বাড়াতে আমরা এখন গুদাম খালি করতে শুরু করেছি। ভিজিডি, ভিজিএফের মতো সামাজিক কর্মসূচির চাল এবং সরকারি বিভিন্ন দফতরে রেশনের চাল এখন আমরা বাড়তি আরও এক-দুই মাস করে অগ্রিম দিয়ে দিচ্ছি। এতেই বোঝা যায়, দেশে চালের কোনো সংকট নেই, বরং উদ্বৃত্ত রয়েছে। তবুও বিশ্ববাজারের অস্থিরতাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা যাতে চালের বাজার অস্থির করতে না পারে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও সরকার সে ব্যাপারেও সতর্ক রয়েছে। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং করছি। আশা করছি, সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য মতে, দেশে চালের বাৎসরিক চাহিদা ৩ কোটি ৫৬ লাখ টন। আর কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বছরে চাল উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি ৮৩ লাখ টন। সুতরাং দেশে এ মুহূর্তে চাহিদার চেয়েও চাল রয়েছে বেশি। বর্তমানে সরকারি গুদামে চাল রয়েছে ১৬ লাখ টনেরও বেশি। দেশে পর্যাপ্ত চাল থাকায় আমদানিও কমানো হয়েছে। বিদায়ি অর্থবছরে ৮ লাখ টন চাল আমদানি করা হয়। তবে উৎপাদন ভালো হওয়ায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে মাত্র ২ লাখ টন করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশে পর্যাপ্ত চাল থাকায় আমদানিতে অনীহা রয়েছে আমদানিকারকদের।
উৎপাদন ভালো হওয়ায় দেশে এখন মজুদ পরিস্থিতিও ভালো। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি খাদ্যগুদামে খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে ১৮ লাখ ৬১ হাজার টন। এর মধ্যে চাল রয়েছে ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৩৭ টন। এ ছাড়া গমের মজুদ ১ লাখ ৮১ হাজার ৮২৮ টন ও ধানের মজুদ ৩২ হাজার ৭৩০ টন। এর সঙ্গে বোরো মৌসুমের চাল আরও গুদামে এলে চালের মজুদ ১৮-২০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com