মোসাইদ রাহাত ::
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়নে উচ্ছ্বসিত তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। এজন্য তারা দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ হলে তারা বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের বিগত কমিটিতে দলের যোগ্য, ত্যাগী এবং পরীক্ষিত নেতাদের বঞ্চিত করা হয়েছিল। ওই সময় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতেই সময় নেয়া হয় দীর্ঘ ১৮ মাস। হাইব্রিড-সুযোগসন্ধানীদের তৎপরতায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। স্থিমিত হয়ে পড়েছিল দলীয় কার্যক্রম। তবে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ্য এবং শক্তিশালী নেতৃত্বকে বেছে নেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজপথের পরীক্ষিত নেতা নূরুল হুদা মুকুটকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ৯০ দশকে ছাত্রলীগের তুখোড় নেতা নোমান বখত পলিনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করায় তৃণমূলে প্রাণ ফিরে আসে। তাঁদের যোগ্য নেতৃত্বে সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগ আবারো চাঙ্গা হয়ে ওঠে। জেলা আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করতে গত ৯ সেপ্টেম্বর যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে – তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন হতে পারে না। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে এই কমিটি অত্যন্ত চমৎকার এবং শক্তিশালী। এই কমিটিতে তৃণমূল উচ্ছ্বসিত এবং উজ্জীবিত।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রণজিত চৌধুরী রাজন বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত, পরিশ্রমী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে মূল্যায়ন করেছেন। তাঁর নির্দেশক্রমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর তৃণমূলের রাজনীতিতে নতুনভাবে ত্যাগীদের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় সফল করার জন্য এই কমিটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং তৃণমূলের কাছে গ্রহণযোগ্য। আশা করি উপজেলা পর্যায়েও দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা জায়গা পাবেন। তিনি আরও বলেন, দুর্দিনে পরীক্ষিত নেতাকর্মীরাই আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তখন হাইব্রিডদের রাজপথে দেখা মিলেনি। তারা সবসময় সুযোগসন্ধানী। তারা মনোনয়ন বাণিজ্য থেকে শুরু করে দলের মধ্যে বলয় তৈরি করেছিল। এখনো তারা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে অনুমোদিত জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। রনজিত চৌধুরী রাজন বলেন, বিগত কমিটিতে বলয় সৃষ্টির কারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন, অনেকে রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগে যোগ্য এবং পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন নাহিদ বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এই কমিটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য সামনের জাতীয় নির্বাচন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুনামগঞ্জের ৫টি আসনেই আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করবো।
জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. বিমান কান্তি রায় বলেন, আমি এই কমিটি ঘোষণার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট ও সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিনকে। এই কমিটি প্রকাশের পর থেকে তৃণমূলে আনন্দের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সবাই খুশি হয়েছেন। আমাদের লক্ষ আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় নিয়ে আসা। বাংলাদেশের উন্নয়নধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিতের বিকল্প নেই।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিতেন্দ্র তালুকদার পিন্টু জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর সবাই খুশি। এবারের কমিটিতে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বঞ্চিত ব্যক্তিদের তুলে এনেছেন। এতে তৃণমূলে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, এই কমিটি তৃণমূলের কমিটি। আমাদের কাজ হবেই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের একত্রিত করে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করা। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাব এবং সুনামগঞ্জের ৫টি আসনেই আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করবো।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন বলেন, ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী রয়েছেন। সবাইকে স্বল্প পরিসরে স্থান দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আগামী দিনের যে কোনও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা যায় এমন নেতাদের কমিটিতে মূল্যায়ন করা হয়েছে। ছাত্রলীগের সাবেক তারকা ও সক্রিয় নেতাদের আগামীতে উপজেলা ও পৌর কমিটিসহ বিভিন্ন সাংগঠনিক কমিটিতে মূল্যায়ন করা হবে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগকে আরো সংগঠিত করতে কাজ করবো।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল হুদা মুকুট বলেন, একটি সুন্দর, গতিশীল পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর সবাই খুশি। কমিটিতে ত্যাগী ও পদবঞ্চিতদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। তৃণমূলে দলের জন্য যাঁরা নিবেদিত, তাঁদের তুলে আনা হয়েছে। নবীন-প্রবীণ মিলিয়েই কমিটি হয়েছে। এতে নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত।