1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১:০১ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

উন্নয়নবিরোধী প্রচারণায় বিএনপি-জামায়াত : মিনার সুলতান

  • আপডেট সময় সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গণতান্ত্রিক দেশে সরকারের মন্দ কাজের সমালোচনা করে বিরোধীদল। আবার সরকারের ভালো কাজের প্রশংসাও করে। শুধু ব্যতিক্রম বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ১৫ বছরে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ চোখে পড়েনি বিএনপি-জামায়াত জোটের। পদ্মাসেতুর নির্মাণটা শেখ হাসিনা সরকারের একটি বড় সাফল্য। যারা আওয়ামী লীগের সমালোচক, তারাও এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন। শুধু ব্যতিক্রম বিএনপি। এ অর্জনকে স্বীকৃতি না দিয়ে নেতিবাচক রাজনীতি করেছেন বিএনপির নেতারা। শুধু সমালোচনা করে শান্ত থাকেনি, উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে রীতিমত গুজব-অপপ্রচার চালিয়েছে দলটি।
যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে অপপ্রচার :
২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধের বিচার কাজ শুরু হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের এই উদ্যোগকে ব্যর্থ করে দিতে সব ধরনের চেষ্টা চালায় বিএনপি-জামায়াত। বিভিন্ন অপপ্রচার লোকমুখে ছড়ানো হয়, টিভি টকশোতেও যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বিএনপিকে মিথ্যাচার করতে। তারা বলেছে- “যুদ্ধাপরাধীর বিচার করবে বলে তো ইলেকশন জিতছে, বিচার আর করবে না”, “আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল তো করছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আর করবে না”, “ইলেকশনে যেনো না আসতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতার করছে”, “রায় তো দিইয়েছে, কিন্তু সাজা আর দিবে না”, “ফাঁসি তো একটা দিয়ে ভয় দেখিয়েছে, বাকিগুলা সমঝোতা করবে”। এরপর যখন সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়ে গেল, তখন তারা অপপ্রচার চালালো- “যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে আসলে বিরোধীদলকে পঙ্গু করার পরিকল্পনা করেছে সরকার”।
পদ্মাসেতু নিয়ে গুজব :
প্রতিটা অর্জনের ক্ষেত্রে বিএনপির অবিশ্বাসের সুর থাকে, অপপ্রচার থাকে। যেমন পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ভুয়া অজুহাতে যখন বিশ্বব্যাংক আর এনসি লাভলিন চলে গেলো, আদালতে মামলা হলো, মামলা শেষে কোন দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলো না। অথচ ২০১২ সাল থেকে বিএনপি একের পর এক পদ্মাসেতু নিয়ে সরকারকে দোষ দিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও বলেছেন, জীবনেও এই সরকার পদ্মাসেতু করতে পারবে না। যখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু তৈরির ঘোষণা আসল তখন সরকারকে আরও বেশি কটাক্ষ করলো জামায়াত-বিএনপি। এরপর তৈরি হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এর খরচ শুরু হলো নতুন অপপ্রচার। অথচ পদ্মা পৃথিবীর খর¯্রােতা নদীর একটি। এই সেতু করতে গিয়ে প্রকল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানই বলেছে যে, পাইলিং গভীরতা বেশি, অনেক জায়গায় নিচে মাটি অনেক নরম। তাই অনেক গভীরে পিলার বসাতে হয়েছে। পিলার করতেই এত বেশি টাকা লেগেছে। উদ্বোধনের পর টোল বেশি এটা নিয়েও তারা হৈচৈ করেছে অথচ সেই রুটে চলাচল করা বাস বা সাধারণ যাত্রীরা এই টোলকে বেশি বলছেন না। তারা আনন্দে পদ্মাসেতু দিয়ে পারাপার করছেন কিন্তু সমস্যা শুধু বিএনপির! এসব যুক্তি বিএনপি জামায়াতকে দিয়ে লাভ নেই কারণ তাদের কাজ হচ্ছে উন্নয়নবিরোধী অপপ্রচার।
এখন দেখি বিএনপি নেতারাও পদ্মাসেতুতে যায়, সেলফি তোলে অর্থাৎ উন্নয়নের সুবিধাভোগী হয়েছেন তারা তাহলে এতো বিরোধিতা এবং অপপ্রচার কেনো করা হয়েছিলো! আবার যখনই উন্নয়নে শেখ হাসিনার প্রশ্ন আসবে সাথে সাথেই অবদানের বিষয়টা পাশ কাটিয়ে যায়! মোট কথা এরা সব কিছুই ভোগ করবে, চেটেপুটে খাবে, কিন্তু রাধুনির প্রসংশা করতে এরা নারাজ।
বিদ্যুৎ নিয়ে মিথ্যাচার :
এমনটা দেখা গেছে বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও। ৩৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের দেশে এখন ১৫ হাজার মেগা বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, ভবিষ্যতের চাহিদা আর উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে ২৮০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা আছে ২০২৭ সালের মধ্যে। উৎপাদন চলছে, কৃষি সেচ চলছে, লোডশেডিং নেই আগের মতো, এই সুবিধা ভোগ করার বদলে মাথা ব্যাথা হয়ে দাঁড়ালো সরকার আমাদের ট্যাক্সের টাকায় বসিয়ে বসিয়ে কতো ক্যাপাসিটি চার্জ দিলো। প্রতিদিন গড়ে ৮ হাজার মেগা হিসাবে গত ১৪ বছরে ৪০ হাজার গিগা ওয়াট বিদ্যুৎ দিলো যেই সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সেই বিদ্যুতের হিসাব না করে এই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কে কতো পাচ্ছে তা নিয়ে তাদের অপপ্রচার। কিছু গণমাধ্যম এই অবিশ্বাস সন্দেহ উষ্কে দিচ্ছে, সার-বিদ্যুতের দাবিতে কেউ মরেনি, হারিকেন নিয়ে কেউ মিছিল করেনি, এরচেয়ে বড় বিষয় তাদের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করে কেন সামিট গ্রুপরা কোটিপতি হলো। এগুলো সবই আসলে অবদান অস্বীকার করে জনমানুষের নজরকে ভিন্নদিকে সরানো।
এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে অপপ্রচার :
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন হলো। উত্তরা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত রাস্তায় প্রতিমিনিটে যেখানে শত শত গাড়ি জ্যামে বসে থাকতো, সেই জ্যাম থেকে এখন একটা বড় সংখ্যক প্রাইভেট কার, মালবাহী ট্রাক বাসকে সরিয়ে অন্যদিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে। জ্যাম আরো কমবে যখন স¤পূর্ণ এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হবে। কিন্তু এতেও বিএনপির সমস্যা! তারা বলছে, এতে নাকি আরো জ্যাম বেড়েছে, এটা নাকি বড়লোকের রাস্তা! অথচ বাস মালবাহী ট্রাকও যাবে তাহলে এটা বড়লোকের রাস্তা হয় কিভাবে? আর সেই পুরাতন বক্তব্য খরচ বেশি হয়েছে প্রকল্পে! ভারতে কম আমাদের এখানে বেশি খরচ এমন বক্তব্যও দেয়া হয়েছে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ভারতের যে খরচের উদাহরণ দেয়া হচ্ছে তা নির্মাণসাল আর বর্তমান তো এক না সেটা ভুলে গেলে চলবে না।
মেট্রোরেল নিয়ে মিথ্যাচার :
উত্তরা থেকে গণমানুষের জন্য শুরু হলো মেট্রোরেল প্রকল্প। এই প্রকল্প নিয়ে খুশি হওয়া বদলে বিএনপি চিন্তায় পড়ে গেলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে দিয়ে মেট্রো গেলে ছাত্রদের পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা হবে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাখিদের প্রজননে সমস্যা হবে। হায় বিএনপি! মানুষ হত্যাই যাদের রাজনৈতিক সৌন্দর্য ছিলো তারা কিনা পাখির প্রজনন নিয়ে চিন্তিত! মন্তুরার মুখে শুনি এ কী কথা!
রামপাল ও রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে অপপ্রচার :
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লাবাহী জাহাজ আসলে সুন্দরবনের বাঘ আর মাছের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হবে। রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে এসিডরেইন হবে। আশেপাশে চাষযোগ্য কোন জমি থাকবে না, সবুজের বদলে সব ধূসর হয়ে যাবে। এই রামপালের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে দুই বছর হলো, অথচ সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা শেষ শুমারিতে বেড়েছে। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের আশেপাশে এখনও সবুজ বিলীন হয়ে যায়নি!
একই বিরোধিতা দেখা গিয়েছিলো, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়েও। পারমাণবিক বিষক্রিয়ায় নাকি আশেপাশের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে যাবে, মানুষের মাঝে অসুস্থতা দেখা দেবে, বংশ নির্বংশ হয়ে যাবে। যদিও এমন কোন উদাহারণ তাবৎ বিশ্বে গড়ে ওঠা পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে শোনা যায়নি। তবুও এসব তত্ত্ব প্রচলিত হয় বিএনপির হাত ধরে। বাংলাদেশের প্রতিটি উন্নয়ন কাজেই বিএনপি-জামাত অপপ্রচারে লিপ্ত থাকে। গুজবই এখন বিএনপির সবচেয়ে বড় রাজনীতি।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com