1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৫:১৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

উপসম্পাদকীয় : আসুন পাশাপাশি দু’জন নোবেল জয়ীকে দেখি

  • আপডেট সময় শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সম্প্রতি নোবেল জয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে মামলা হয়েছিল। মামলায় বলা হচ্ছিল, উনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে ছিলেন। অমর্ত্য সেন উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ দিয়ে আদালতে লড়ছেন। অর্মত্য সেনের পক্ষে প্রভাবশালী বিবৃতি দেয়নি। অর্থনীতি শাস্ত্রে তাঁর সুনাম এবংন প্রতিপত্তি বিশ্বজুড়ে। অথচ এসবের কিছুই তিনি ব্যবহার করেননি। বরং বলেছেন, যদি ভুলে কিছু দখল হয়ে থাকে, তাহলে তিনি তা ছেড়ে দিতে রাজি আছেন। তিনি নিশ্চয়ই বোঝেন, আন্তর্জাতিক বন্ধুদের সহায়তা নিয়ে কোটি টাকার জমি বেআইনীভাবে দখল করবার মতো নিচ আর হীন উদ্দেশ্য উনার নেই। তাই আইনের পথেই হাঁটছেন। বলেই দিয়েছেন, কোর্টের রায় যাই আসে, সেটাই মেনে নেবেন।
পাঠক এবার বাংলাদেশের নোবেল জয়ী ড. ইউনূসের কাছে আসি। তার বিরুদ্ধে শ্রম আইন লংঘনসহ বেশ কিছু মামলা আদালতে বিচারাধীন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ নিয়ে আদালতে গেছেন। তিনি বিচারাধীন শ্রম অধিকার লঙ্ঘন মামলার রায় নিজের পক্ষে নিতে বিচারকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী সচিবদের ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বার বার। এটা তদন্তই বের হয়েছে।
সম্প্রতি একটি দালাল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির খবর এসেছে গণমাধ্যমে। একই ঘটনায় পাশাপাশি দেশের দু’জন নোবেল জয়ীর আচরণ সামনে আনলাম। যাতে আচরণগত সভ্যতার বিষয়টি বোঝা যায় পেছন থেকে গল্পটা বললে বুঝতে সুবিধা হবে।
ড. ইউনূস গ্রামীণ টেলিকম “শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের” ১৭৬ জনের হিস্যা ৪৩৭ কোটি টাকা দিতে চাননি। পরে অভিযুক্তরা মামলা করার প্রস্তুতি নিলে সেই টাকা তাদের দিয়ে সমঝোতা করেন। উনার আইনজীবীর একাউন্টে ১৬ কোটি টাকা পাওয়া যায় অভিযুক্তদের সাথে সমঝোতা করানোর জন্য। উনার গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা কামরুজ্জামান, ফিরোজ মাহমুদ, মাইনুল হাসানের একাউন্টে পাওয়া যায় ১৭ কোটি টাকা, যা তাদের দেয়া হয় অভিযোগ উত্থাপনকারীদের ম্যানেজ করার জন্য।
ইদানিং শ্রম আইন লংঘনের সকল অভিযোগ, মামলা ধামাচাপা দেয়ার জন্য বা রায় নিজেদের পক্ষে আনার জন্যে ঢাকা লজিস্টিক এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেড” নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেছেন ইউনূস। গোপন সূত্রের রিপোর্ট বলছে, টাকার অংকে সেই চুক্তির পরিমাণ ১৩.৮০ কোটি। সূত্রটি বলছে, গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভায় কিভাবে ঘুষ দিয়ে বিচারক, মন্ত্রী সচিবদের প্রভাবিত করে নিজেদের পক্ষে আনা যায় সেই প্রস্তাব দেয় ঢাকা লজিস্টিকস। বোর্ড সভায় ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন ড. ইউনূস। সেখানে দেয়া বক্তব্যের অডিওতে শোনা যায়, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস বলছেন চুক্তি অনুমোদন করা হলো। কিন্তু বোর্ড সভার সিদ্ধান্তে এই বিষয়টি লেখার সময় যেন ঘুষ দেয়ার বিষয়টি বাদ দেয়া হয়। ওই সভার কার্যবিবরণীতেই পাওয়া যায়, গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে শ্রম আদালতের একজন চেয়ারম্যানের অবৈধ লেনদেন ছিল।
এর আগেও ড. ইউনূস শ্রমিকদের পাওনা থেকে বঞ্চিত করার জন্য, কোর্টের বাইরে সমঝোতা করার জন্য আইনজীবীদের সাথে অস্বাভাবিক অংকের টাকা লেনদেন করেন। এই ঘটনার তদন্ত নিয়েও একটি মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে। এখন সচেতন মানুষেরা প্রশ্ন করছেন, ড. ইউনূস যদি অন্যায় নাই করে থাকেন, তাহলে কেন কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে মামলাকে প্রভাবিত করবার চেষ্টা করছেন? কেন বেআইনীভাবে ইনফ্লুয়েন্সার কোম্পানি নিয়োগ করে ঘুষ দিয়ে বিচারক, মন্ত্রী, সচিবদের প্রভাবিত করতে চাচ্ছেন? কেনই বা শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ নিজের পক্ষে আনতে কোটি টাকা খরচ করছেন?
এর একটাই অর্থ দাঁড়ায়, ড. ইউনূস এবং উনার প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকম আসলেই আইনের ব্যত্যয় করছেন। বেআইনীভাবে শ্রমিকদের অধিকার হরণ, ড. ইউনূস নিজের প্রভাব প্রতিপত্তি, বিদেশি কানেকশন ব্যবহার করছেন। তার মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে বন্ধুদের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবিত ঋণ বাতিল করিয়েছেন। সরকারকে চাপ দিয়েছেন। এ থেকেই আসলে বোঝা যায় তিনি কতটা আদর্শিক, কতটা নীতিবান।

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com