স্টাফ রিপোর্টার ::
ইজারাবিহীন ধোপাজান-চলতি নদীর পাথরমিশ্রিত বালু মহালে সিন্ডিকেট কর্তৃক বালু-পাথর লুট বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সচেতন নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে রবিবার বিকেলে সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বালাকান্দা নদী তীরবর্তী এলাকায় এই মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ধোপাজান-চলতি নদীর দুই তীরের বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এদিকে মানববন্ধন কর্মসূচির খবর জানতে পেরে বালু-পাথরখেকো সিন্ডিকেটের কিছু সদস্য বাধা দিতে আসে। তবে এলাকাবাসীর তোপের মুখে তারা পিছু হটে এবং দ্রুত সেখান থেকে সরে যায়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন হুরারকান্দা গ্রামের বাসিন্দা মুজিবুর রহমান, রামপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুন নূর, ভাদেরটেক মনিপুরি হাটির বাসিন্দা জাহেদ আলী হুরারকান্দা গ্রামের বাসিন্দা সাচ্চু মিয়া, আমীন মিয়া প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা তৈবুর মিয়া, মনা মিয়া, জাকির হোসেন, কামাল হোসেন, মহিনূর, আব্বাস আলী, রহিম মিয়া, সাজ্জাদুর রমান প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একটি সিন্ডিকেট রাত ও দিনে শত শত বারকি নৌকা ধোপাজান-চলতি নদীতে প্রবেশ করিয়ে উজান এলাকায় গিয়ে পাথর উত্তোলন করছে। এসব নৌকা থেকে পুলিশ বিজিবির নাম ভাঙিয়ে নৌকা প্রতি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা উত্তোলন করছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এই অসাধু চক্র প্রভাব খাটিয়ে সুকৌশলে উত্তোলনকৃত পাথর সুরমা নদীতে এনে নিদিষ্ট বাল্কহেড, স্টিলবডি নৌকা বা ক্রাসার মিলে বিক্রি করে রাতারাতি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। এতে একদিকে সরকার যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে অবৈধ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে দুই উপজেলার অন্তত ২০ হাজার মানুষ বেকার থেকে যাচ্ছে। মুনাফাখোর সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য দমনে ইজারাবিহীন বালুমহালের পাথর উত্তোলন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে নদীতে অবৈধভাবে বালি পাথর উত্তোলনের প্রতিবাদ জানিয়ে হুরারকান্দার বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ধোপাজান চলতি নদীর ইজারা বন্ধ। বন্ধ নদীতে অবৈধভাবে সিন্ডিকেটর সাহায্যে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন ৫০ হাজার ফুট পাথর সমপরিমাণ বালি উত্তোলন করে পাচার হচ্ছে। স্থানীয় একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই সুযোগে অবৈধ টাকাপয়সার মালিক বনে যাচ্ছে। বাধা দিলে মামলা হামলার হুমকিধমকি দিচ্ছে চক্রের সদস্যরা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে একাধিক অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আমরা চাই এই নদী সরকারিভাবে ইজারা দেয়া হোক। মানুষ বৈধভাবে বালিপাথর উত্তোলন করুক। এতে সরকারও বিপুল রাজস্ব পাবে আর মানুষেরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
ভাদেরটেক মনিপুরি হাটির বাসিন্দা কালা মিয়া বলেন, নদীতে প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবির নাম করে নৌকার কাছ থেকে টাকা তুলছে এই সিন্ডিকেট। তারা নদীতে রমরমা ব্যবসা করছে। প্রতিদিন শত শত নৌকা দিয়ে পাথর সুরমা নদীতে নিয়ে যায়, কেউ বাধা দিচ্ছে না। আমরা চাই সরকারের এই খনিজ সম্পদ যাতে পাচার না হয়। এই অন্যায় কাজ বন্ধ করা হোক।