স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের তিন সীমান্ত হাটের ভেতরে সাধারণভাবে বাথরুম নির্মাণ হলেও হাটের বাইরে অপেক্ষমাণ মানুষজনের জন্য জরুরি স্থাপনা নির্মাণ হয়নি। এতে হাটে আগতরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এছাড়া সীমান্ত হাটের প্রবেশপথ বা যোগাযোগ সড়কেরও উন্নয়ন নেই। হাটে মালবাহী যান ও যানবাহন চলাচলেও দুর্ভোগে পড়ছেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও পর্যটকরা। এ সমস্যা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড়ের সাহিদাবাদ ও ভারতের নালিকোটা এলাকায় সীমান্তের নো-ম্যান্সল্যান্ডে জেলার তৃতীয় সীমান্ত হাট হিসেবে উদ্বোধন হয় চলতি বছরের ২৪ মে। এই সীমান্ত হাট জমে উঠে সপ্তাহের প্রতি বুধবার। হাটের বাইরে নির্মাণ হয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর ছাউনি, নির্মাণ হয়নি টিকিট কাউন্টার, প্রবেশকারীদের ছাউনি, ভিআইপিদের রিফ্রেশ রুম, ওয়াস ব্লক। হাটে নেই সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা, হাটের প্রবেশ পথেও নেই পাকাকরণ। এসব কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সীমান্ত হাটে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
দোয়ারাবাজার উপজেলার বাগানবাড়ি ও ভারতে রিংকু এলাকার মধ্যবর্তী স্থান ২০২২ সালের ১২ মে দ্বিতীয় সীমান্ত হাট হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। এই হাট জমে সপ্তাহের প্রতি বৃহ¯পতিবার। এই সীমান্ত হাটেও কোনো জরুরি স্থাপনা নির্মাণ হয়নি। হাটে যাতায়াতের সড়কপথেরও কোনো উন্নয়ন নেই। এই কারণে আগতরা নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ডলুরা এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নো-ম্যান্সল্যান্ডে জেলার প্রথম সীমান্ত হাট উদ্বোধন করা হয় ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল। এই হাট জমে ওঠে সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার। হাটের বাইরেও ক্রেতা-বিক্রেতা ও পর্যটকদের সেবায় কোনো জরুরি স্থাপনা নির্মাণ হয়নি। এতে নানা সমস্যায় পড়ছেন সীমান্ত হাটে আসা মানুষজন। এমনকি হাটে আসা-যাওয়ার চৌমুহনী-ডলুরা সড়কের দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন নেই।
লাউড়েরগড় সীমান্ত হাটে আসা ব্যবসায়ী লিটন সরকার বলেন, সীমান্ত হাটের বাইরে কোনো স্থাপনা নির্মাণ না হওয়ায় রোদ-বৃষ্টির দিনে আগত মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। এসব সমস্যা নিরসনের দাবি আমাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা আফাজ উদ্দিন বলেন, সীমান্ত হাটের বাইরে অবস্থানরত মানুষদের বসার বা পানি পানের ব্যবস্থা না থাকায় নানা সমস্যার শিকার হচ্ছেন। এসব সমস্যা সমাধানের দাবি জানাই।
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, সীমান্ত হাটের বাইরের অংশে যাত্রী ছাউনি ছাড়াও নানা উন্নয়ন প্রয়োজন। সীমান্ত হাটের উন্নয়নে আমাদের ইউনিয়নে তেমন বরাদ্দ নেই। তবুও সাধ্যমত উন্নয়নের চেষ্টা করছি।
জাহাঙ্গীরনগর ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ বলেন, সীমান্ত হাটের বাইরের অংশের উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অচিরে সকল সমস্যা সমাধান হবে।
বোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিলন খান বলেন, গত বছর উদ্বোধন হয়েছে এই হাটের। বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ কাজ হচ্ছে। প্রায় দেড় কিলোমিটার কাচা সড়কের সাইটে গার্ডওয়াল নির্মাণ হচ্ছে। তবে কাজ চলছে ধীরগতিতে। আশা করি হাটের বাইরের অংশে জরুরি স্থাপনা নির্মাণ হবে। এতে সকল সমস্যা সমাধান হবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, সুনামগঞ্জের ৩ সীমান্ত হাটের বাইরের অংশে দর্শনার্থীদের জন্য কোথায়ও ছাউনি নির্মাণ করা হয়নি। ওয়াস বক্ল, টিকেট কাউন্টারসহ প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণ খুবই জরুরি।