1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

টাউন হল মার্কেট : বহুতল ও দৃষ্টিনন্দন বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স নির্মাণের ভাবনা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩

শামস শামীম ::
বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরের গোড়াপত্তনের সময় সামাজিক, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বৃটিশ সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ‘টাউন হল’ প্রতিষ্ঠা করেছিল। সুনামগঞ্জ শহরেও এরকম একটি স্থাপনা করেছিল। ট্রাফিক পয়েন্টেই আজকের টাউন হল। ঠিক কবে টাউন হল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ইতিহাসের সেই লিখিত কোন ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি। তবে লোকমুখে এই গল্প চালু আছে। তবে বৃটিশ আমলের একেবারে শেষে এখানে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। পাকিস্তান আমলে সুনামগঞ্জ কলেজ হাছননগরে নতুন ক্যাম্পাসে চলে যাওয়ায় পুরোপুরি পরিত্যক্ত ছিল এলাকাটি। স্বাধীনতার পর স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীর দৃষ্টি পড়ার পর পৌরসভা ও প্রশাসনের মৌন সমর্থনে শুরু হয় মার্কেট নির্মাণের তৎপরতা। স্বাধীনতার পর মার্কেট নির্মাণ করে বাণিজ্যিকভাবে এলাকাটি ব্যবহৃত হলেও সরকার এক টাকাও রাজস্ব পাচ্ছেনা। পৌরসভাও বঞ্চিত পৌর কর থেকে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘টাউন হল’র নামে ১৫ শতক মূল্যবান ভূমি জেলা প্রশাসনের ১নং খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত। এলাকাটিতে ব্যবসায়িক স্থাপনা করে ব্যবস্থাপনার জন্য ১৯৭৫-১৯৭৬ সনে জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পৌরসভা ‘টাউন হল কমিটি’ নামে কমিটি করে। ওই কমিটি বসে একটি মার্কেট নির্মাণ কার্যক্রমের পরিকল্পনা নেয়। ১৯৮৮-১৯৮৯ সনে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মার্কেট নির্মাণে হাত দেন তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী। জেলা প্রশাসনের মৌন অনুমতিও আদায় করে নেন তিনি। শহরের প্রাণকেন্দ্রের এই মূল্যবান ভূমিতে তাড়াহুড়ো করে অপরিকল্পিত একটি মার্কেট নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে অন্তত ২৫ জন ব্যবসায়ীকে মৌখিকভাবে দোকানকোঠা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল তারাই পান দোকানকোঠা বরাদ্দ। আইনগত জটিলতার কারণে কাউকেই বৈধ কোনও কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। এরপর থেকেই ব্যবসায়ীরা এই মার্কেটে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের মালিকানাধীন এই ভূমি থেকে সরকার কোনও রাজস্ব পায়না। পৌরসভাও এখান থেকে কোন পৌরকর পায়না। ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে অপরিকল্পিত ও জরাজীর্ণ মার্কেটটি ঝুঁকির পাশাপাশি শহরের প্রধান কেন্দ্রের সৌন্দর্য্যহানিরও অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্যবসায়ী ও সুধীজন জানান, বর্তমানে শহরের প্রাণকেন্দ্রের এই ভবনটি কেবল শহরের সৌন্দর্য্যহানিই করছেনা, এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় বিরাট ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যে কোন সময় সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই শহরের মূলকেন্দ্রে এরকম জীর্ণশীর্ণ ভবন অবিলম্বে ভেঙে দৃষ্টিনন্দন বাণিজ্যিক ভবন করা যেতে পারে। এতে ব্যবসার বিকাশ ঘটবে। সরকারও মোটা অংকের রাজস্ব পাবে।
জানা গেছে, জনদাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন কাজ শুরু করেছে। তারা মৌখিকভাবে দোকানকোঠা বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদেরকে ব্যবসায়িক পজিশন বরাদ্দের সুযোগ রেখে এখানে বহুতল আধুনিক বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, বৃটিশ আমলে এটি টাউন হল নামে পরিচিত। নাগরিকদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং বিকাশের স্বার্থে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। স্বাধীনতার পরে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা টাউন হল কমিটি করে এটির ব্যবস্থাপনায় হাত দেন। এরপর থেকেই ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভবন করে বিভিন্নজনকে মৌখিকভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এখান থেকে পৌরসভা কোন পৌরকর পায়না। তবে এখন প্রশাসন নিজেদের মূল্যবান জায়গায় বহুতল বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স করার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল হুদা চপল বলেন, শহরের প্রাণকেন্দ্র টাউন হল। সরকারের মূল্যবান সম্পত্তি। কিছু মানুষ অবৈধভাবে এটি দখল করে আছে। এখন পরিবেশটাও ঘিঞ্জি। অপরিকল্পিতভাবে করা মার্কেটটিও খুবই জরাজীর্ণ। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এখানে দৃষ্টিনন্দন বহুতল বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স করে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের ব্যবসার সুযোগ করে দিলে শহরের পরিবেশও সুন্দর হবে, সরকারও রাজস্ব পাবে।
অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক বিজন সিংহ বলেন, ১নং খাস খতিয়ানের টাউন হলের নামে ১৫ শতক মূল্যবান ভূমি রয়েছে। এর মালিক জেলা প্রশাসন। এখন যারা এখানে আছেন তারা ১৯৭৫-১৯৭৬, ১৯৮৮-১৯৮৯ সন থেকে বিভিন্ন সময়ে নিজেরা ভবন নির্মাণে অর্থ ব্যয় করে দোকানকোঠার পজিশন নিয়ে আছেন। তারা কেউ এই জায়গার মালিক নন। তবে তাদেরকে পুনর্বাসনের আওতায় রেখে আমরা এখানে বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স করার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছি। ইতোমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। এটি হলে শহরের সৌন্দর্য্য বাড়বে। যেহেতু এটি বাণিজ্যিক স্পেস সে হিসাবে সরকারের রাজস্বও আসবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com