স্টাফ রিপোর্টার ::
ইজারাবিহীন ধোপাজান-চলতি নদীর পূর্ব ও পশ্চিম তীরে অবৈধভাবে পাথর ও বালি উত্তোলন বন্ধের দাবিতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে এলাকাবাসীর পক্ষে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে বালু-পাথর লুটেরা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার নেয়া দাবি জানানো হয়। রোববার দুপুরে এলাকাবাসীর পক্ষে আবেদনটি করেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের হুরারকান্দার বাসিন্দা মো. সাচ্চু মিয়া।
ওই আবেদনে সিন্ডিকেটের ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন পৌরসভার সাহেববাড়ি এলাকার বাসিন্দা মৃত মোতাহের আলীর ছেলে রাজিব আহমদ (৩৫), গৌরারং ইউনিয়নের লালপুরের বাসিন্দা হাজী আব্দুস সোবহানের ছেলে মমিন মিয়া (৪৮), সুরমা ইউনিয়নের হুরারকান্দার বাসিন্দা ইন্তাজ আলীর ছেলে রমহান আলী (৪৪), বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের ভাদেরটেক গ্রামের খায়ের মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া (৩৫), জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের কাইয়ারগাঁও গ্রামের ছৈদ আলীর ছেলে মকবুল হোসেন (৪২) এবং একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে ওমর ফারুক (৩৬)।
আবেদনের উল্লেখ করা হয়, ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদীতে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট শ্রমিকের সাহায্যে নদী থেকে দিন ও রাতে বেআইনিভাবে পাথর উত্তোলন করছে। পরে এগুলো চলতি নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে স্তূপ করে রাখছে। স্তূপকৃত পাথরসহ নতুনভাবে উত্তোলিত পাথর বারকি নৌকায় বোঝাই করে পৃথক দুটি পথ ব্যবহার করে নৌপথের বিভিন্ন বাল্কহেড ও স্টিলবডি নৌকার মালিক ও ব্যবসায়িদের কাছে বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা পকেটস্থ করছে। সিন্ডিকেট সদস্যরা সরকারের এই মূল্যবান খনিজ স¤পদ বালি-পাথর রাতের বেলা ড্রেজার ও বোমা মেশিন দ্বারা উত্তোলন করে এবং দিনের বেলা বারকি নৌকায় করে সুরমা নদীতে নিয়ে বিক্রি করে। বিভিন্ন সময় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক ধরপাকড় অভিযানের কারণে বিকল্প নিরাপদ রুট হিসেবে লালপুর গ্রাম সংলগ্ন গজারিয়া নদী ব্যবহার করে চোরাইকৃত বালিপাথর পাচার করে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এই সিন্ডিকেটের লোকেরা। প্রতি রাত ও ভোর বেলা প্রায় দেড়শতাধিক নৌকার মাধ্যমে ৫০ হাজার ঘটফুট পাথর ও সমপরিমাণ বালি লুট করায় সরকার মোটা অংকের রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়া অবৈধ ড্রেজারের মাধ্যমে বালি পাথর উত্তোলন করায় নদী তীরবর্তী হুরারকান্দা, বালাকান্দা, ভাদেরটেক, রামপুর, মনিপুরহাটসহ কয়েকটি গ্রামের বসতভিটা, মসজিদ, রাস্তাঘাট, জমি ক্ষতি সাধনের পাশাপাশি পরিবেশের বিপর্যয় অব্যাহত রয়েছে। আবেদনে সরকারি খনিজ স¤পদের চুরি ও পাচার বন্ধে অভিযুক্ত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসীর পক্ষে দাবি জানান সাচ্চু মিয়া।
এবিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীন বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।